প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার ‘নারী শক্তি’কে দেশের উন্নয়ন ও প্রগতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে তুলে ধরেছেন (Narendra Modi Nari Shakti), যা তাঁর ‘বিকশিত ভারত’ স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু। তিনি নারীদের ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণ এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে তাঁদের অসামান্য অবদানকে কুর্নিশ জানান। তাঁর এই বার্তা একদিকে যেমন কেন্দ্রের ‘নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন’ মডেলকে জোরদারভাবে তুলে ধরল, তেমনই অন্যদিকে মণিপুরের ভয়াবহ হিংসা ও নারীর প্রতি অপরাধের যন্ত্রণার মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ‘বিস্ময়কর নীরবতা’ এবং ‘গণমাধ্যমের মুখোমুখি না হওয়ার’ বিতর্ক বিরোধীদের হাতে তুলে দিল মারাত্মক অস্ত্র।
প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন, কীভাবে ভারতের নারীরা শতাব্দী ধরে প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে বর্তমানে উন্নত ভারত গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন (Narendra Modi Nari Shakti)। তিনি বলেন, “শিক্ষা থেকে ব্যবসা, কৃষি থেকে প্রতিরক্ষা—প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের মা, বোন এবং কন্যারা আজ নতুন নতুন মাইলফলক স্থাপন করছেন। গত ১১ বছরে নারী শক্তির সম্মিলিত সাফল্য প্রত্যেক ভারতবাসীর জন্য গর্ব ও অনুপ্রেরণার উৎস।” তিনি স্বচ্ছ ভারত অভিযান, জন ধন অ্যাকাউন্ট, উজালা যোজনা, এবং ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ অভিযানের মাধ্যমে ‘নারী-নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন’ বাস্তবায়নের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই ‘নারী শক্তি’ বিষয়ক বক্তব্যের পরপরই বিরোধীরা তীব্র আক্রমণ শুরু করে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এক্স-এ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধে বলেন, “বিশ্বজুড়ে গণতান্ত্রিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা নিয়মিত খোলামেলা সংবাদ সম্মেলন করেন, কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী গত ১১ বছরে একটিও ‘আনডক্টর্ড প্রেস মিট’ করেননি।” তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী কেবল ‘লিখিত চিত্রনাট্য’ অনুযায়ী গণমাধ্যম সম্পর্ক পরিচালনা করেন এবং সাংবাদিকদের ‘সরাসরি মুখোমুখি’ হওয়ার সাহস তাঁর নেই।
মণিপুরে নতুন করে সহিংসতা বৃদ্ধি এবং নারী-শিশুদের উপর নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীর ‘বিস্ময়কর নীরবতা’ ও ‘অসংবেদনশীলতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। জয়রাম রমেশ বলেন, “মণিপুরের মানুষের লাগাতার দুর্ভোগ এবং সেখানকার নারী ও শিশুদের উপর চলা অত্যাচারের প্রতি ঘন ঘন বিদেশ সফরকারী প্রধানমন্ত্রীর অসংবেদনশীলতা সত্যিই হতবাক করার মতো।” বিরোধীরা দাবি করেছে, প্রধানমন্ত্রী মুখে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বললেও, মণিপুরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনি চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ।
এই বিতর্কগুলো বিজেপির জন্য আগামী দিনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। জনগনের আদালতে কে জিতবে—প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের বার্তা, নাকি বিরোধীদের প্রশ্নের তীব্রতা—সেই উত্তর দেবে সময়।