জন্মের পরিচয় পত্র না থাকায়, স্কুলের বেঞ্চে জায়গা হয়নি এই কচিকাঁচাগুলোর! যার কারণে আজও জীবন যুদ্ধ থেকে পিছিয়ে রয়েছে তারা! কিন্তু আর নয়, এবার সময় এসেছে অন্ধকার গলি থেকে বেড়িয়ে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়ার! স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতার পথে পা বাড়াতে চলেছে যৌনপল্লীর সেই সকল কচি-কাচারা, যাদের কারোর স্বপ্ন পুলিশ হওয়ার, তো কারোর আর্মি!

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করতে চলেছে দেশের সকল অন্ধকার গলিগুলি। কিন্তু ওদের যে কোন স্বাধীনতা নেই! এমনকি, ওদের বাচ্চাদেরও আর পাঁচটা বাচ্চার মত বেড়ে ওঠার সুযোগ নেই! কারণ, ওরা যৌনকর্মীদের সন্তান।

সোনাগাছির পর রাজ‍্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম যৌনপল্লী হল বসিরহাটের মাটিয়া। সরকারি হিসাবে সেখানকার যৌনকর্মীর সংখ‍্যা প্রায় ১০০০ হলেও, বাস্তবে সংখ্যাটা অনেক বেশি। রাজ‍্যের সমাজের আর পাঁচটা বাচ্চার মত এই যৌনপল্লীর শিশুরা শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থেকে অনেকটাই দূরে থাকে। নিষিদ্ধপল্লীর অন্ধকারময় গলিতে তাদের বেড়ে ওঠা। কিন্তু তারাও তো চায় খেলতে আর পাঁচটা বাচ্চার মত পড়াশুনা করে সমাজ তথা দেশের নাম উজ্জ্বল করতে? সব থেকে বড় কোথা, নিজের পায়ে দাঁড়াতে! কারণ যৌনপল্লী থেকে বাইরে গিয়ে যখন তারা অন্য স্কুলে বা সমাজের অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে মিশতে চায় তখনই চলে আসে নানান ধরনের কটুক্তি। অন্য বাচ্চাদের অভিভাবকদের অনীহা-সহ একাধিক ভর্ৎসনা। যা তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। তাই সেই সমস্ত কচিকাঁচাদের বেড়ে উঠতে তথা তাদের স্বাধীনতার পথ খুঁজে দিতে আগামী ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন তারা এক নতুন উপহার পেতে চলেছে। কারণ যৌনপল্লীর ভেতরেই তাদের জন্য তৈরি হচ্ছে পড়াশোনার সমস্ত রকম ব্যবস্থা।

বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার জবি থমাস কে.-এর নির্দেশে মাটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তাপস ঘোষের সহযোগিতায় ও বসিরহাট দুর্বার সমিতির মাটিয়া শাখার উদ্যোগে বসিরহাট ২নং ব্লকের মাটিয়া যৌনপল্লীতে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে এক শিক্ষাঙ্গন। যে অ্যাকাডেমি ওই সমস্ত যৌনপল্লীর যৌনকর্মীর সন্তানদের নতুন আলোর পথ দেখাবেন উদ্যোক্তারা। সেখানে তারা প্রাথমিক পর্যায়ে এক বছর বয়স থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের শিকার ব্যবস্থা করছেন। আগামী দিনে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী অবধি ক্লাস চালু করে স্কুলটিকে বাড়ানোর চিন্তাভাবনাও রয়েছে তাদের। আর এখন অপেক্ষা শুধু উদ্বোধনের। যৌন কর্মীরা জানান, তারা তাদের সন্তানকে বাইরে পড়াতে গেলে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হন। তাই এই ধরনের উদ্যোগের জন্য তাদের তরফ থেকে রয়েছে সাধুবাদ।

 

আরো দেখুন:Recipe: বাইরের বৃষ্টি দেখতে দেখতে বাড়িতে জমিয়ে খান ঘরে বানানো পনির কোলাপুরি