পাখির চোখ ২০২৬-এ বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন।স্বাভাবিকভাবেই আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের টানা ১০ দিনের এই বাংলা সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছিলেন রাজনৈতিক মহল।কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, তা পূর্ব বর্ধমানের সভায় তাঁর বলা প্রত্যেকটা কথার মধ্যে দিয়েই বুঝিয়ে দিলেন মোহন ভাগবত।

বেশ কিছু বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে রবিবার আরএসএসের সভা হয়ে গেল বর্ধমানে।সেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত।সেখানে হিন্দুদের উদ্দেশ্যে বড় বার্তা দেন সংঘ প্রধান।

এদিন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ আরএসএস সঙ্ঘ চালক মোহন ভাগবত আয়োজিত সভায় বলেন,-“সঙ্ঘের একমাত্র লক্ষ্য হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করা।”

মোহন ভাগবতের বক্তব্যে স্পষ্ট উঠে আসে হিন্দু সমাজ ও ভারতবর্ষের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের কথা।বলেন,-“হিন্দু সমাজ ও ভারতবর্ষ একই রূপ। এই স্বভাব পরম্পরার সঙ্গে যাঁদের কাছে এসেছে, তাঁরাই হিন্দু।” তিনি আরও যোগ করেন,-“ভারতীয়দের এই স্বভাব অনেক প্রাচীন। যাঁরা ইন্দো-ইরানিয়ান প্লেটে বসবাস করেন, তাঁরা এই স্বভাব পেয়েছেন। এই স্বভাব হল, বিশ্বের বিবিধতাকে স্বীকার করে চলা। হিন্দু জানে, সত্য একটাই, কিন্তু সবার নিজের নিজের বিশিষ্টতা রয়েছে। এই বিশিষ্টতার সম্মান করাই হিন্দুত্বের মূল কথা।”

ভাগবত হিন্দুত্বের ব্যাখ্যায় রামায়ণের উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন,-“ভারতে অনেক রাজা এসেছেন গিয়েছেন। কিন্তু মানুষ সেই রাজাদেরই মনে রেখেছেন, যিনি নিজের বাবার কথা রাখতে ১৪ বছর বনবাসে গিয়েছিলেন। তাঁর ভাই ১৪ বছর ধরে দাদার নামেই দেশ চালিয়েছেন, পাদুকা সিংহাসনে রেখে। ১৪ বছর পর দাদা ফেরত আসার পর তাঁর হাতে রাজ্যপাট তুলে দেন।”

তিনি স্বামী বিবেকানন্দের উদাহরণও তুলে ধরেন। তাঁর মতে,-“পুরো ভারতে এমন এক ব্যক্তির কথা চলে, যিনি এক পয়সাও রোজগার করেননি, কোথাও থেকে নির্বাচিত হয়ে আসেননি। কিন্তু সেই স্বামী বিবেকানন্দের নাম গোটা ভারতবর্ষ জানে। তাঁর মায়ের চিন্তায় খেতরির রাজা মানি অর্ডার পাঠাতেন। হিন্দুদের এই স্বভাবের জন্যই ভারত আছে। এই স্বভাব নেই, তো ভারত নেই।”

প্রসঙ্গত,বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত ও নিপীড়িত হচ্ছেন।এই প্রসঙ্গ এদিন টেনে আনেন ভাগবত।বলেন,-“পড়শি দেশ বড় বিপদে রয়েছে! কেন্দ্রের উচিত গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার।” বাংলাদেশের পরিস্থিতি কিছুটা থিতু হলেও, বাংলায় এসে হিন্দু সমাজের মাহাত্ম্য ও ভারতীয় ঐতিহ্যের কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন এদিন তিনি।মোহন ভাগবতের মতে,-হিন্দু সমাজ ও ভারতবর্ষ একই রূপ, এবং এই ধ্রুপদী ঐতিহ্য আজও প্রাসঙ্গিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *