বীরভূম জেলার বোলপুর শান্তিনিকেতনের অন্যতম আকর্ষণ, ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা।বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট মূলত সেই পৌষ মেলা পরিচালনা করেন।গতবছর করোনার অজুহাতে পৌষমেলা বন্ধ করে দেয় বিশ্বভারতী।এবছর স্কুল কলেজ,যানবাহন, অন্যান্য মেলা চালু হলে ও শান্তিনিকেতন পৌষমেলা নিয়ে এখনও অনিশ্চিয়তা।বিশ্বভারতী কতৃপক্ষের কাছে রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত পৌষমেলা চালুর দাবিতে স্থানীয় ব্যবসাদাররা দীর্ঘদিন ধরে আবেদন নিবেদন করে আসছেন কিন্তু এবিষয়ে উপচার্যের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই বলে স্থানীয়দের ক্ষোভ। বোলপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে ও পৃথকভাবে মেলা করার জন্য চিঠি দেন, প্রয়োজনে মেলার দায়িত্ব কাঁধে নিতে প্রস্তুত বলে পৌরসভা জানিয়ে দেন।এবিষয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের কোনো অসুবিধা নেই বলে জানান কিন্তু বিশ্বভারতী কতৃপক্ষ তথা উপচার্যের পক্ষ থেকে সদুত্তর পাওয়া যায়নি। গত দুদিন আগে ও স্থানীয় ব্যাবসায়ী এবং বাউল শিল্পীদের দল অভিনব পদ্ধতিতে গান গেয়ে গেয়ে মেলা চালুর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এদিকে পৌষমেলা ঘনিয়ে আসতেই আর বিশ্বভারতীর অপেক্ষায় না থেকে বিকল্প জায়গায় পৌষ মেলার প্রস্তুতি শুরু করে দেয় মঙ্গলবার,বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের উদ্যোগে।আগামী ২৩ শে থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বোলপুর ডাকবাংলা ময়দানে হতে চলেছে বিকল্প পৌষ মেলা। ইতিমধ্যেই ২৩ থেকে ২৭ ডিসেম্বর বোলপুর বিশ্ববাংলা ক্ষুব্ধ বাজারেও বিকল্প মেলা করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্যের ক্ষুদ্র,কুটির ও বস্ত্র বয়ন শিল্প দপ্তরের। উল্লখ্য বোলপুর শান্তিনিকেতনের অন্যতম আকর্ষণ ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলায় কিন্তু মেলার আয়োজন নিয়ে চলছে নানা টালবাহানা। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মেলা নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করেনি। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট মেলা করতে চাইলেও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দেয়নি। সব মিলিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষ মেলার আয়োজন করবে না তাও মোটামুটি পরিষ্কার। রবীন্দ্র ঐতিহ্য মেনে কুটির শিল্প, হস্তশিল্পকে গুরুত্ব দিয়েই বিকল্প পৌষ মেলার প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ।স্থানীয় ব্যাবসায়ী সমিতি, বাউল সম্প্রদায় সহ বিভিন্ন স্তরের লোকজনদের নিয়ে মেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার সভাপতি নির্বাচিত করা হয় শিক্ষিকা মনিষা ব্যানার্জীকে। এক সাক্ষাৎকারে মনিষা ব্যানার্জী বলেন বহু আবেদন নিবেদন করে ও বিশ্বভারতী কতৃপক্ষ কোনো সাড়া দেননি। জেলা পরিষদ মেলা করার জন্য ডাকবাংলো মাঠটি ব্যবহার করার অনুমতি দেন ।৭ ই পৌষ চিরন্তন ঐতিহ্য শান্তিনিকেতন আশ্রমকে তৈরি করেছে, তাকে ঘিরেই পৌষমেলা। লোকায়িত সাংস্কৃতিককে গুরুত্ব দিয়ে সামনে তুলে ধরা হয়েছে, সেটা নষ্ট হওয়া মানে ঐতিহ্য নষ্ট হওয়া। সেই সমস্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য আমাদের এই প্রচেষ্টা।