মানসিক স্বাস্থ্য (Mental Health) হলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের মনস্তাত্বিক, আবেগীয়, এবং সামাজিক সুস্থতার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ যা আমাদের চিন্তাভাবনা করার প্রক্রিয়া, অনুভব করার শক্তি নির্ধারণ করে ও বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আমাদের প্রতিক্রিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখে। মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সিদ্ধান্ত নেওয়া, সম্পর্ক তৈরি করা, এবং জীবনের নানা চাপের সাথে মোকাবিলা করার দক্ষতা প্রদান করে। প্রতিটি মানুষের সুস্থ মানসিক অবস্থা একান্ত কাম্য কারণ মানসিক সুস্থতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে অনেক সহজ করে তোলে। এটি আমাদের কাজের দক্ষতা বাড়ায়, সম্পর্কের গভীরতা বুঝতে সাহায্য করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে বাড়ায়। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে আমরা চাপ, উদ্বেগ এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভেঙে না গিয়ে সহজেই মোকাবিলা করতে পারি।

 

আরো পড়ুন: Recipe: বাড়িতে বানিয়ে নিন কফি আইসক্রিম রেসিপি

 

তবে মানসিক স্বাস্থ্যের (Mental Health) অবহেলা করলে তার নেতিবাচক প্রভাব গিয়ে পড়তে পারেশারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরেও। দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ বা বিষণ্ণতার যদি সঠিক চিকিৎসা না হয় তবে তা থেকে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার হ্রাস ঘটাতে পারে। তাই শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতাও সমান গুরুত্ব পাওয়া উচিত।

 

মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য কিছু কার্যকর অভ্যাস অনুসরণ করা জরুরি। যেমন:

 

নিয়মিত ব্যায়াম করা।

সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ।

পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা।

প্রিয়জনদের সাথে মানসম্পন্ন সময় কাটানো।

নিজেকে ভালোবাসা এবং নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া।

 

মানসিক স্বাস্থ্যের (Mental Health) অবনতি ঘটলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এর আগে অনেকেই সাইকোলজিস্টের কাছে যাওয়াকে বাঁকা চোখে দেখতেন এবং এখনো অনেকেই সমাজে কে কি বলবে তা মনে করে চিকিৎসা না করিয়ে পিছিয়ে আসেন। তবে বর্তমানে যেভাবে দিনের পর দিন অবসাদ, উদ্বেগ, স্ট্রেস ও অন্যান্য মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে তাতে এর সঠিক চিকিৎসা না করালে সমস্যা আরো গভীর হতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হলে তবেই একটি সুস্থ সমাজ গঠন করা সম্ভব হবে।

 

কি উপসর্গ দেখলে তৎক্ষণাৎ আমাদের চিকিৎসকের মতামত নেওয়া প্রয়োজন:

 

১. অতিরিক্ত দুঃখ বা হতাশা বোধ করা

২. দৈনন্দিন কাজকর্মে আগ্রহ হারানো

৩. অতিরিক্ত ঘুমানো বা একদমই ঘুম না হওয়া

৪. সবসময় উদ্বেগে থাকা বা এমন ভয় পাওয়া

৫. খুব বেশি খাওয়া বা একেবারেই না খাওয়া

৬. অল্প কারণেই অত্যধিক রাগ বা বিরক্ত হওয়া

৭. কাজ বা পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা

৮. অ্যালকোহল বা মাদকের ওপর নির্ভরশীলতা

৯. বন্ধু-বান্ধব, পরিবার বা কাজের ক্ষেত্রে অকারণে

১০. মৃত্যু বা আত্মহত্যার চিন্তা

 

মানসিক স্বাস্থ্য (Mental Health) কেবল ব্যক্তিগত নয়, এটি সামাজিক উন্নয়নেরও প্রধান উপাদান। তাই আপনি বা আপনার পরিচিত কোনো ব্যক্তি যদি এই সমস্ত উপসর্গের সম্মুখীন হয় তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা পরামর্শদাতার সাথে যোগাযোগ করুন। প্রাথমিক পর্যায়ে মানসিক সমস্যার সঠিক চিকিৎসা হলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে।

By Torsha

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *