র্যাগিংয়ের মানসিকতা তৈরি হয় কেন? কী মারাত্মক পরিণতি হতে পারে র্যাগিংয়ের জন্য?কেনোই বা র্যাগিং নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না?র্যাগিংয়ের জন্য আইনি কি ব্যবস্থা নেওয়া যায়?জানেন?
আসলে এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে অনেক কঠোর পদক্ষেপের পরও র্যাগিং সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ র্যাগিং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রিপোর্ট করা হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষক ও কলেজ কর্তৃপক্ষ র্যাগিংকে তুচ্ছ মনে করে বা তারা গুরুতর মানসিক পরিণতি সম্পর্কে সচেতন নয়।তবে র্যাগিং একটি গুরুতর অপরাধ। তাই এইবিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি,নয় মারাত্মক বিপদ হতে পারে।জীবন অব্দি চলে যেতে পারে। যেমন সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মতো মেধাবী ছাত্রকে বাংলা চিরকালের জন্য হারিয়েছে।
এখন প্রশ্ন একটাই, এই র্যাগিংয়ের মানসিকতা তৈরি হয় কেন?মনোরোগ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অপরাধ মনস্ক মানসিকতা থেকেই তৈরি হয় হেনস্তার ইচ্ছে। নতুন ভর্তি হওয়া অধিকাংশ পড়ুয়ার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। নতুন পরিবেশে তুলনামূলক তারা দুর্বল। তাই তাদের উপর নানান অত্যাচার করা যাবে, এই ভাবনা থেকেই র্যাগিং করে কিছু সিনিয়ার পড়ুয়ারা। তবে এই ভাবনা সুস্থ মানসিকতার লক্ষণ নয় বলেই মনে করছেন মনোরোগ চিকিৎসকরা।
মনোবিদরা জানাচ্ছেন, র্যাগিং সামাজিক ব্যাধি এবং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। সে সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি।
তাহলে এর রোধ কিভাবে সম্ভব? র্যাগিং যাদের সাথে হয়,সেইসব পড়ুয়ারা কী ধরনের আইনের সাহায্য পাবেন? এবং যারা র্যাগিং করবে, তারা কী ধরনের শাস্তি পাবে?
যেসমস্ত পড়ুয়াদের মধ্যে র্যাগিং করার ইচ্ছা শক্তি জন্মায়,তাদের শাস্তি দেওয়া এই অপরাধ রোধ করার মুখ্যম উপায়।
কোনও ছাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে কিংবা হস্টেলে কোনও রকম হেনস্তার শিকার হলে, তা শারীরিক হোক কিংবা মানসিক, লিখিত অভিযোগ দায়ের করা উচিত। শুধুমাত্র সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকেই নয়। প্রয়োজনে সরাসরি ইউজিসি-র অ্যান্টি র্যাগিং সেলে যোগাযোগ করা উচিত। সেখানেও এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা যায়। আর এই ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের উচ্চশিক্ষা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। রেজাল্ট আটকে রাখা যেতে পারে। এমনকি জেলও হতে পারে। অভিযুক্তের পাশপাশি সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পারে ইউজিসি।
তাই ভয় নেই,অন্যান্য অপরাধের মতো র্যাগিং – এর জন্য সরকার যথেষ্ট তৎপর।তাই র্যাগিং হলে ভয় না পেয়ে,নিজের জীবন বলি না দিয়ে সরাসরি আইনি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
আরো দেখুন:শ্রাবনের শেষ সোমবারে শিবভক্তদের নজরকাড়া সমাগম কোলাঘাটে