শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে (Corruption in teacher recruitment) নয়া মোড়!এবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জোরালো জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত তাপস মণ্ডল নামে এক শিক্ষকের।মূলত,নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতির মাঝেই কোমরে দড়ি পড়েছে একের পর এক নেতার।আর এমন টালমাটাল পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার আবার গ্রেফতার হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য।আর তাকে গ্রেফতার করার পরই ইডির হাতে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

আর সেইসব তথ্যের ভিক্তিতেই মানিক ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচয় পাওয়া গেছে তার।আর সেই সূত্র ধরেই শনিবার সাত সকালেই আরো তৎপর হয় ইডি।নিউ টাউন সংলগ্ন মহিষবাথানের একটি কোচিং সেন্টারে প্রথম হানা দেয় ইডি আধিকারিকরা।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর,মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলই মহিষবাথানের এই বাড়িটি মিনার্ভা এডুকেশন সোসাইটির নামে ভাড়া নিয়ে একটি টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার খোলেন।সেখানে অবশ্য কোনও সাইন বোর্ড নেই।এই অফিসেই নাকি নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিল মানিক ভট্টাচার্যের।ইডির দাবি এখান থেকে যাবতীয় কলকাঠি নাড়তেন মানিক।এদিন এই অফিসে প্রথমে ইডি আধিকারিকরা হানা দিলেও,অফিসটির সমস্ত দরজা বাইরে থেকে তালা লাগানো থাকে।চাবি না পেয়ে ঢুকতে দীর্ঘক্ষণ বাইরে তারা অপেক্ষা করে।অবশেষে একজন চাবিওয়ালাকে ডেকে নিয়ে এসে শাটারের তালা ভেঙে অফিসের ভিতরে ঢোকেন অফিসাররা।

ইডি সূত্রে খবর,মহিষবাথানের অফিস থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর চাকরির আবেদনপত্র।এছাড়াও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কয়েকটি হার্ড ডিস্ক।এই কোচিং সেন্টার সম্পর্কে স্থানীয়দের বক্তব্য, গত ৩-৪ মাস ধরে অবশ্য অফিসটি বন্ধ।আর তারপর থেকে তাপসকে এলাকায় দেখা যায়নি।বাড়ি ভাড়াও বাকি।এছাড়াও এদিনই বারাসাত স্টেডিয়ামের কাছে অবস্থিত মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের বাড়িতেও হানা দেয় ইডি।জানা যায়,শনিবার সকাল আটটা নাগাদ ইডির একটি তদন্তকারী দল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে বারাসতের বাদু অঞ্চলে তাপস মণ্ডলের বাড়িতে পৌঁছে যান।এবং তল্লাশি অভিযান শুরু করেন।এদিন সেখান থেকেও বেশ কিছু প্রয়োজনীয় নথির খোঁজ পায় এদিন তদন্তকারীরা।এদিকে ইডির এই তল্লাশি অভিযানের মাঝেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বারাসাত।

দেখা যায়,এই দুর্নীতি ইস্যুতে তাপস মণ্ডলের বারাসতের বাড়ির গেটের সামনেই শনিবার, ‘চোর ধরো জেলে ভরো’ প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান এসএফআই কর্মীরা। আন্দোলনকারীদের কথায়, শিক্ষাক্ষেত্রে একের পর এক দুর্নীতি হয়েছে।প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন।সেই যোগসূত্র ধরেই শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা গ্ৰেফতার হচ্ছেন এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের জেরার মুখেও পরছে বিভিন্ন ঘনিষ্ঠরা।তাদের অভিযোগ, তৃণমূল সরকার আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্ৰস্থ।এর‌ বিরুদ্ধে তাদের বিক্ষোভ এবং এসবের পেছনে থাকা মূল মাথাকে সামনে আনাই তাদের উদ্দেশ্য।তাদের আরও দাবী, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী এই সকল বিষয়ে কিছু জানেন না, এটা হতে পারে না।তাই অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবী তোলেন তারা। শিক্ষাঙ্গনে যে দুর্নীতি অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের এই আন্দোলন লাগাতার চলবে এবং সকল ছাত্র সমাজকে এক হওয়ার আহ্বানও জানান এদিন আন্দোলনকারীরা।

 

আরো পড়ুন:TMC:বিজেপির বিরুদ্ধে পতাকা ছেঁড়ার অভিযোগে,নন্দীগ্রামে পথ অবরোধ তৃণমূলের!