নদীয়ায় তৃণমূল (Tmc) বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়।এবার তার বিরুদ্ধেই উঠল দলীয় পদ দেওয়ার নাম করে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ।তবে এ মামলায় বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে উল্টে অভিযোগকারী অর্থাৎ দলীয় কর্মীকেই আটক করে পুলিশ।যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।ঠিক কি ঘটেছিল?

জানা যায়,নদিয়ার করিমপুর ব্লক ২ এর এক তৃণমূল কর্মী হাসান আলি মন্ডল কৃষ্ণনগর পুলিশ ডিস্ট্রিক্টের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান।সেখানে তিনি বলেন,নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান তথা করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায় তাকে ব্লক সভাপতি পদ পাইয়ে দেবেন এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।তবে তার জন্য ৭ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন।জুন মাসের শেষ সপ্তাহে তিনি নদিয়া জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ অফিসের একটি ঘরে বসে সেই টাকা নেন।কিন্তু গত ২০শে অগাস্ট যখন জেলাভিত্তিক সংগঠনিক তালিকা প্রকাশিত হয় তখন সেখানে ব্লক সভাপতি হিসেবে হাসান আলি মণ্ডলের নাম কোথাও উল্লেখ ছিল না।যার কারণে তিনি বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানান বিমলেন্দু সিংহ রায়ের কাছে।

আর তারপর সাত লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেন।কিন্তু হাসান আলি মণ্ডলের অভিযোগ টাকা ফেরত চাইলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে এমনটাই হুমকি দিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক।তাই বাধ্য হই আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে।তিনি আরো বলেন,-“আমি নিজে একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মী।আমার ছেলেও সেনায় কর্মরত।আমরা নিরাপত্তার অভাবে ভুগছি।পুলিশের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি।”অন্যদিকে, নিজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়।সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন,এই অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।যদি আমরা বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেন,তবে রাজনীতি ছেড়ে দেব।বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায় আরো বলেন,এর পিছনে প্রচ্ছন্ন ইন্ধন থাকতে পারে।এমনকি এখানেই থেমে না থেকে,এই মিথ্যা অভিযোগের জন্য কৃষ্ণনগর পুলিশ সুপার ও করিমপুর থানায় পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

তারপরই এই ঘটনায় করিমপুর থানার পুলিশ হাসন আলি মণ্ডলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।কিন্তু তিনি জানিয়েছেন,আমার কাছে কোনও প্রমাণ নেই।মুখের কথায় বিশ্বাস করে এই টাকা দিয়েছিলাম।তিনি আরো জানান,কেউ আমাকে প্ররোচিত করেননি।এই বিষয়ে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কল্লোল খাঁ জানিয়েছেন,অভিযোগ তো করলেই হল না।অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে যে তিনি টাকা দিয়েছিলেন।তিনি যদি টাকা দেওয়ার কথা প্রমাণ করতে না পারেন,তবে প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

সব মিলিয়ে এই অভিযোগ সামনে আসতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য-রাজনীতি।কৃষ্ণনগর পুলিশ সুপার কৃশানু রায় জানান,বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।এর মধ্যে কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, তাও জানার চেষ্টা চলছে।এখন দেখার ঘটনাটি সত্য না মিথ্যা।কোন দিকে মোড় নেই ঘটনাটি।

 

আরো পড়ুন:Tmc:গার্ডেনরিচে তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলের রহস্য মৃত্যু!খুন নাকি আত্মহত্যা তদন্তে পুলিশ