মঙ্গলবার ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে মিলিত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সঙ্গে এক বৈঠক করেন।আর এদিনের এই বৈঠক যে কতোটা গুরুত্বপূর্ন তা বেশ ভালোই বুঝতে পারছে রাজনৈতিক মহল।দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে এদিন ৭টি মৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।স্বাক্ষরিত এই মৌ-চুক্তির মধ্যে রয়েছে কুশিয়াড়া নদীর জলবণ্টন সমস্যার সমাধান, রয়েছে ভারতের সিএসআইআর এবং বিসিএসআইআর-এর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।রয়েছে ভোপালের ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমি ও
বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে সংযোগরক্ষা।রয়েছে রেলচুক্তিও।যাতে আগামী দিনে ভারতের প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের রেলকর্মীরা ট্রেনিং গ্রহণের সুবিধা পান।ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের সুবিধা যাতে বাংলাদেশও পায় সেটার ক্ষেত্রেও আলোচনা হয়েছে।মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও প্রসার ভারতীর মধ্যেও।স্পেস টেকনোলজির ক্ষেত্রেও স্বাক্ষরিত হয়েছে মৌ।
এদিনের বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেন নরেন্দ্র মোদী এবং শেখ হাসিনা। এদিন যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন থেকে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘ভারত এবং বাংলাদেশের উপর দিয়ে ৫৪ টি নদী বয়ে যায়। দুই দেশের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতি এক্ষেত্রে জড়িয়ে রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর জলবণ্টন নিয়ে আজ আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সাক্ষর করেছি।’মোদী বলেন, ‘ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।সেক্ষেত্রে আইটি, মহাকাশ গবেষণা এবং নিউক্লিয়র সেক্টরে আমরা একে অপরের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব।’ তার মতে, ‘এই মুহূর্তে প্রদেশে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সঙ্গী হল বাংলাদেশ।’
যদিও এদিন তিস্তা চুক্তি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।প্রধানমন্ত্রী তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে কোনও কথা না বললেও, শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি আশাবাদী এই বিষয়গুলি এবং তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি সম্পর্কিত আলোচনাও খুব শীঘ্রই ফলপ্রসূ হবে।’ তিনি বলেন, ‘আগেও দু’দেশ পরস্পরের পাশে থেকে একাধিক সমস্যার সমাধান করেছে। আশা করছি, তিস্তার মতো সমস্যা-সহ একাধিক বিষয় জট কাটবে বন্ধুত্বের জোরেই।’ ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের প্রশংসা শোনা যায় এদিন শেখ হাসিনার মুখে। প্রতিবেশী দেশের জন্য এই দুই দেশের সম্পর্ক নজির বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তার মতে,দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সমস্যা যতোই থাকুক না কেন, আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া হবে।তিনি এও বলেন যে, মোদীজির নেতৃত্বে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক অন্য মাত্রা পেয়েছে। বৈঠক শেষ হাসিনা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দু-দেশের মধ্যে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, সীমান্ত সমস্যা, জলবন্টন-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। ওই লড়াইয়ের পর ও ভারত ও বাংলাদেশ মৈত্রীর বাতাবরণে বসবাস করছে। আমাদের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে মোদীজির নেতৃত্ব।’
আরো পড়ুন:Modi : নিজের খাওয়ার জন্য সরকারি তহবিল থেকে টাকা নেন না মোদী