ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় বিপুল সম্পত্তির দখল নিল ইডি। শনিবার তদন্তকারী সংস্থার তরফে নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে,সবমিলিয়ে ৬৬১ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পত্তির দখল নেওয়া হবে।ইতিমধ্যেই এই মর্মে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার সম্পত্তি নিবন্ধকদেরও।গত ১১ এপ্রিল ওই মামলায় দিল্লি, মুম্বই এবং লখনউয়ে ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রের প্রকাশনা সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড’ (এজেএল) এবং মালিক সংস্থা ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান’-এর স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইডি।
শুক্রবার দিল্লির আইটিওতে অবস্থিত ‘হেরাল্ড হাউস’, এবং মুম্বইয়ের বান্দ্রা ও লখনউয়ের বিশ্বেশ্বর নাথ রোডে অবস্থিত এজেএল ভবনের দরজায় নোটিস সেঁটে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অবিলম্বে ওই ভবনগুলি খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) মেনেই ইডির এই পদক্ষেপ।
জওহরলাল নেহরুর হাতে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র নিয়ে ২০১৩ সালে মনমোহন সিংহের জমানাতেই প্রথম দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়। এর মূলে ছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর অভিযোগ ছিল, এজেএল নামে যে সংস্থার হাতে সংবাদপত্রটির মালিকানা ছিল, বাজারে কোটি কোটি টাকার দেনা ছিল তাদের। যার বেশির ভাগটাই কংগ্রেসের কাছ থেকে নেওয়া।২০০৮ সালে সংবাদপত্রটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। সেই অবস্থাতেই সংস্থাটি অধিগ্রহণ করে সনিয়া, রাহুল এবং শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থা। এর পর ন্যাশনাল হেরাল্ডের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ইয়ং ইন্ডিয়ানের দখলে চলে আসে। কোটি কোটি টাকা দেনার বোঝাও চাপে তাদের ঘাড়ে। এর কিছু দিন পর ‘দেনার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব নয়’ বলে কারণ দেখিয়ে কংগ্রেসের তরফে ঋণের টাকা মকুব করে দেওয়া হয়। সেই নিয়েই আপত্তি তোলেন স্বামী। তাঁর যুক্তি, কংগ্রেস রাজনৈতিক দল হওয়ায় তাদের কোনও কর দিতে হয় না। কোনও বাণিজ্যক সংস্থাকে ঋণ দেওয়াও তাদের এক্তিয়ারের বাইরে। এর পরেই মালিকানা হস্তান্তরে বেআইনি লেনদেন হয়েছিল কি না, তার তদন্তে নামে ইডি।