এবার ১০০ দিনের কাজের টাকা ফেরতের দাবিতে সোচ্চার হলো রাজ্য সরকার।প্রসঙ্গত,২০২২ সাল থেকে একাধিক বার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ১০০ দিনের টাকা ছাড়ার আবেদন জানানো হলেও কেন্দ্রীয় সরকার এখনও সেই অর্থ মঞ্জুর করেনি।এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের সঙ্গে দেখা করতে সময় চেয়েছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার।তাঁর সঙ্গে আলোচনার আগে তথ্যপ্রমাণ প্রস্তুত রাখতে রাজ্যের সব জেলা প্রশাসনের কাছে ১০০ দিনের কাজের ভুয়ো জব কার্ড সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে নবান্ন।নবান্নের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ১০০ দিনের কাজের অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সমস্ত শর্ত পূরণ করেও টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পঞ্চায়েত মন্ত্রী যাতে যথাযথ তথ্য উপস্থাপন করতে পারেন, তার জন্যই এই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ১০০ দিনের কাজের ডিসট্রিক্ট নোডাল অফিসারদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছে পঞ্চায়েত দফতর। সেই বৈঠকে জেলা প্রশাসনকে ভুয়ো জব কার্ডের তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে, যে সব কার্ড বাতিল হয়েছে, সেগুলোর হোল্ডারেরা আগে কোনও টাকা পেয়েছেন কি না, সে বিষয়ে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, এই প্রকল্পের অডিট সংক্রান্ত কাজ দ্রুত শেষ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চায়েত দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘২০২২ সাল থেকে বাংলার ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তিন বছর ধরে রাজ্য একাধিক বার টাকা ছাড়ার দাবি জানালেও কেন্দ্র তা মঞ্জুর করেনি। উল্টে রাজ্যের উপর একের পর এক শর্ত চাপানো হচ্ছে।’গত ২৫ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকার একটি চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যের ১০০ দিনের কাজের জব কার্ড বাতিল সংক্রান্ত নির্দেশিকা পুনরায় মনে করিয়ে দেয়। ১০ পাতার ওই চিঠিতে ভুয়ো জব কার্ড বাতিলের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।প্রথমত, তিন বছর ধরে কেউ কাজ না করলে। দ্বিতীয়ত, বাসস্থান ছেড়ে দীর্ঘ দিন অন্যত্র চলে গেলে। তৃতীয়ত, একই পরিবারের একাধিক জব কার্ড থাকলে। চতুর্থত, কার্ড হোল্ডারের মৃত্যু হলে। কেন্দ্রের দাবি, এমন ভুয়ো জব কার্ড বাতিল করার কাজ রাজ্যকে করতে হবে। পাশাপাশি, যাঁদের মৃত্যুজনিত কারণে জব কার্ড বাতিল হয়েছে, তাঁদের পরিবার ন্যায্য প্রাপ্যের টাকা পেয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগে সমস্ত তথ্য প্রস্তুত রাখতে চান। তিনি চাইছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় রাজ্যের কাজের যথাযথ হিসাব তুলে ধরা হোক, যাতে কেন্দ্র আর কোনও নতুন শর্ত আরোপ করে অর্থ আটকে রাখতে না পারে। তবে, রাজনৈতিক মহলের মতে, কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েনের জেরে বাংলার শ্রমিকেরা ভুগছেন। ১০০ দিনের প্রকল্পে কর্মরত বহু শ্রমিক তাঁদের প্রাপ্য টাকা পাননি। ফলে এই অর্থ কবে রাজ্যে আসবে, তা নিয়ে এখনই নিশ্চয়তা নেই।