অষ্টম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০২৫ (BGBS 2025) শুরু হল বিশাল আড়ম্বরে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশের এবং বিদেশের নানা শিল্পপতি ও প্রতিনিধিরা। তাঁদের মধ্যে মুকেশ আম্বানি এবং সজ্জন জিন্দল অন্যতম। রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ আম্বানি এবং জিন্দল গোষ্ঠীর প্রধান সজ্জন জিন্দল বাংলায় বিনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন এই সম্মেলনের মঞ্চ থেকে।
এরপর মঞ্চে বক্তব্য রাখেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তাঁর বক্তৃতার শুরুতে সকল অতিথিকে ধন্যবাদ জানান। মুকেশ আম্বানিকে ধন্যবাদ জানিয়ে মমতা বলেন, ”মুকেশজি আপনারা সবটাই বললেন। আমার বলার কিছুই রইল না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে দিঘা, সব কিছুই তুলে ধরেছেন। কলকাতা বিশ্বকে যুক্ত করবে, এটা আপনি বলেছেন। আমার বলার কিছুই নেই। আমি এবং আমার পরিবার আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বাংলার প্রতি আপনার ভালোবাসা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা সকল রাজ্যকে ভালোবাসি। রবীন্দ্রনাথ জাতীয় সঙ্গীতে বলেছেন, ‘পঞ্জাব সিন্ধু গুজরাত মারাঠা’, আমরা খুব ভাগ্যবান যে বাংলার জন্য এত কিছু করছেন আপনি।”
রাজ্যে বিনিয়োগের সম্ভাবনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ”ভারতের পূর্বে রাজধানী ছিল বাংলা। আমরা আজও দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছি। আমাদের ভুলবেন না। বাংলায় বিনিয়োগের অসীম সুযোগ রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে বাংলা, আর এখন সবাই আমাদের অনুসরণ করছে।”
পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের ব্যাপারে মমতা বলেন, ”দেশে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পে আমরা প্রথম, নারী ক্ষমতায়নে প্রথম। আমাদের সরকার প্রতিদিন কাজ করছে। বাংলায় এখন আর ধর্মঘটের সংস্কৃতি নেই। গত সাতটি বিজিবিএস-এ ৯০ লক্ষ ৫১ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আমাদের জিডিপি দেশের গড় জিডিপির চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে।”
বিরোধীদের সমালোচনার জবাবও দেন মমতা। তিনি বলেন, ”অনেকে প্রশ্ন করেন, বিজিবিএস থেকে কী লাভ? আমার উত্তর হল, এটি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য। আমরা রাজ্যবাসীর প্রতি দায়বদ্ধ।”
তিনি আরও ঘোষণা করেন যে, বিনিয়োগ এবং শিল্প স্থাপনের প্রক্রিয়া সহজতর করতে বিশেষ একটি কমিটি গঠন করা হবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন মুখ্যসচিব। এই কমিটি এককভাবে সমাধান প্রদান করবে, যাতে বিনিয়োগকারীরা নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেন। চা বাগানে চা উৎপাদন না হওয়া ক্ষেত্রগুলোতে ৩০ শতাংশ ছাড়ে হোটেল, ইকো ট্যুরিজম বা হোম-স্টে স্থাপনের জন্য শিল্পপতিদের সুযোগ দেওয়া হবে, তবে এতে স্থানীয় কর্মসংস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
মমতা জানান, রাজ্যে বর্তমানে ২৮০০টি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা রয়েছে। ইনফোসিস তাদের নতুন অফিস খুলেছে, এবং আইটিসি আন্তর্জাতিক মানের ডেটা সেন্টার চালু করেছে। গত দুই বছরে বাংলায় ১৯ কোটি পর্যটক এসেছেন এবং দুর্গাপুজা ও অন্যান্য উৎসবের মাধ্যমে বাংলায় এক লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। তিনি বলেন, টাটা সংস্থার প্রতিনিধিরা কিছু সমস্যার কারণে আসতে পারেননি, তবে ভবিষ্যতে তাদের প্রতিনিধিরা বাংলায় আসবেন এবং বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হবে। শেষপর্যন্ত তিনি ”জয় হিন্দ, জয় বাংলা” বলে তাঁর বক্তৃতা শেষ করেন।
আরও পড়ুন:Priyanka Chopra Jonas: বিয়ের আগে নিকের মধ্যে কোন গুণগুলি দেখে নিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা?