পুরুলিয়ার জঙ্গলে বনদপ্তরের ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা দিল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।সিমলিপাল ব্যাঘ্রপ্রকল্প থেকে আসা জিনাত এই জেলায় ৬ দিন কাটানোর পরেও ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা দেয়নি। তবে জিনাতের পুরুষসঙ্গী বাংলায় এসে ৭ দিনের মাথায় বনবিভাগের ক্যামেরায় ধরা দিল।শনিবার ভোরে পুরুলিয়ার সেই রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলে বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা দিল বাঘটি।তার উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরই তাকে বাগে আনতে তৎপরতা শুরু বন দফতরের।পাতা হয়েছে খাঁচা।পাশাপাশি,ঘুমপাড়ানি গুলিরও বন্দোবস্ত করা হয়েছে।যদি পাতা খাঁচায় ধরা না দেয়,তবে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে তাকে কাবু করার পরিকল্পনা বন দফতরের।মনে করা হচ্ছে,এই বাঘটি জ়িনতের পিছু পিছু ওই এলাকায় ঢোকে।ফলে সে বাঘিনির সঙ্গী হলেও হতে পারে।

কয়েক দিন ধরেই পুরুলিয়ায় বাঘের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পায়ের ছাপ দেখে স্থানীয় ভাবে বাঘের উপস্থিতি জানা গেলেও বাঘের অবস্থান নিয়ে তেমন নিশ্চিত তথ্য মিলছিল না। তবে শনিবার ভোরে রাইকা পাহাড়ে বন দফতরের তরফে বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় ছবি ধরা পড়তেই বন দফতর এক প্রকার নিশ্চিত বাঘের অবস্থান সম্পর্কে।মূলত,গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে ঝাড়খণ্ড-বাংলায় লুকোচুরি খেলার পর,১৮ দিনের মাথায় তার ছবি পাওয়া গেল।এই ঘটনাকে বড়সড় সাফল্য বলেই দেখছে রাজ্যের বনবিভাগ।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে,শুক্রবার সন্ধ্যার পর রাইকা পাহাড় থেকে বাঘ বেরিয়ে বান্দোয়ান কুইলাপাল রাস্তা পেরিয়ে পৌঁছে যায় নেকড়া গ্রাম সংলগ্ন হাতিরামগোড়ার জঙ্গলে।স্থানীয়দের দাবি,তাঁরা খুব কাছ থেকে বাঘটিকে যেতে দেখেন। সেই খবর পেয়েই হাতিরামগোড়ার জঙ্গলে নজরদারি বাড়িয়ে দেন বনকর্মীরা।সেখানে রাত কাটিয়ে শনিবার ভোর ৩টে নাগাদ আবার রা‌ইকা পাহাড়ে ফিরে যায় বাঘটি।বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে,রাতে হাতিরামগোড়ার জঙ্গলে একটি বুনো শুয়োর মেরে খায় সে।বন দফতর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে,হাতিরামগোড়ার জঙ্গল থেকে রাইকা পাহাড়ে ফেরার পথে ভোর ৩টে ২৫ মিনিট নাগাদ বাঘটির ছবি ধরা পড়ে বন দফতরের বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায়।ক্যামেরায় ছবি ধরা পড়তেই তৎপরতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় বন দফতর।রাইকা পাহাড় সংলগ্ন বান্দোয়ান ব্লকের রাহামদা গ্রাম লাগোয়া এলাকার কিছু অংশ জাল দিয়ে ঘেরা হয়।বাঘের ‘সম্ভাব্য গতিপথে’ নতুন করে খাঁচা বসানোর কাজও করছেন বনকর্মীরা।পাশাপাশি, ঘুমপাড়ানি গুলি করার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।ডাকা হয়েছে হুলাপার্টিকেও।বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে,রাইকা পাহাড়ের এক দিক থেকে হুলাপার্টির মাধ্যমে তাড়া করে অন্য দিকে বিশেষ কৌশলে বাঘটিকে খাঁচাবন্দি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।বন দফতরের কেন্দ্রীয় চক্রের মুখ্য বনাধিকারিক এস কুলানডাইভেল বলেন,-“বাঘটি রাইকা পাহাড়েই রয়েছে।বাঘের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা স্থানীয় এলাকার মানুষকে সচেতন করার কাজও করছি।পাশাপাশি বাঘটিকে খাঁচাবন্দি করার সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *