শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই মালদার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকার খুন হয়েছে,এমনই প্রশ্নের জন্ম নিচ্ছে নতুন করে।কারণ এবার মালদহের তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনের ঘটনায় দলেরই টাউন সভাপতি তথা হিন্দি সেলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে থানায় ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ।মঙ্গলবার কয়েক দফায় ওই নেতাকে ইংরেজবাজার থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একইসঙ্গে থানায় ডেকে পাঠানো হয় নরেন্দ্রনাথের দুই ভাই ধীরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি এবং অখিলেশ তিওয়ারিকেও।

পুলিশ সূত্রে খবর, ইংরেজবাজার থানায় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নরেন্দ্রনাথকে। সন্ধ্যা পর্যন্ত থানা থেকে বার হতে দেখা যায়নি ওই তৃণমূল নেতাকে। তাঁর দুই ভাইকে পরে ডাকা হয়। তিন জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। নরেন্দ্রবাবু অবশ্য দাবি করেন,- এই ঘটনায় আমাদের বাড়ির কেউ জড়িত নন। আমরা পুলিশকে তদন্তে সহযোগিতা করছি।

প্রসঙ্গত,২০২২ সালে পৌরসভা ভোটে নন্দু শিবির এবং দুলাল শিবির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গন্ডগোল হয়েছিল। দুলাল গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নন্দু এবং তার ভাইকে মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশের অনুমান এই সূত্রেই দুলাল সরকার খুনের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে তারা। তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এদিন। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে, সোমবার দুলাল বাবুর শ্রাদ্ধনুষ্ঠানের শেষে তার স্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দুলালবাবু চেয়ারম্যান হবেন এমন কথা চলছিল। তবে বিষয়টি আপনারা জানেন। এখন কিছু বলবো না। পুলিশ তদন্ত করছে। যাদের ক্ষমতার লোভ। কিছু মানুষের হিংসা। অনেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। দুলাল সরকার বা বাবলা সরকার রাজনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তারাই এ কাজ করেছে।ফের সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন মালদায় নিহত তৃণমূল নেতা বাবলা সরকারের স্ত্রী।

তিনি বলেন,- নিকৃষ্ট মনের মানুষ।যারা করেছে তাদের লোভ চাহিদা জন্য এমন কাজ করেছে।তবে এক ব্যক্তি নয় ,একাধিক ব্যক্তি রয়েছে এই খুনের ঘটনায়।নাম না করলেও কার্যত কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর দিকে আঙুল তোলেন নিহত দুলাল চন্দ্র সরকারের স্ত্রী চৈতালি সরকার।এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।দুলাল চন্দ্র সরকারের স্ত্রী সাংবাদিকদের জানান তার স্বামী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য ছিলেন।তিনি নিজে সব কাজ মিটে গেলে খুব শীঘ্রই কলকাতায় গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন।চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কাছে তিনি তার স্বামীর খুনের ব্যাপারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য,এর আগে দুলাল সরকার হত্যাকাণ্ডে দলীয় গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরনো সহকর্মীকে হারিয়ে প্রশাসনিক সভায় ক্ষোভ ব্যক্ত করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত পুলিশের জালে পাঁচ জন। দুলালকে খুন করতে ১০ লক্ষ টাকা সুপারি দেওয়া হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে দুলাল সরকারকে হত্যা করার জন্য কেনো এত পরিকল্পনা,কোন স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এই খুন,সেই বিষয়ে চিরুনি তল্লাশি করছে পুলিশ প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *