প্রায় আট বছর পর স্টার জলসার মেয়েবেলা ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে কামব্যাক করেন রূপা গাঙ্গুলি (Rupa Ganguly)। কিন্তু চার মাসেই যে তার সফর শেষ হবে তা কে জানত! মেয়েবেলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে এলেন রূপা, তার পরিবর্তে দেখা যাচ্ছে অনুশ্রী দাসকে। কেনো সরে গেলেন রূপা?
রূপা গাঙ্গুলির মতে এই ধারাবাহিকের কনটেন্ট রিগ্রেসিভ। কিন্তু ধারাবাহিকের প্রথম থেকেই যখন এমনই নানারকম ঘটনা দেখা যাচ্ছে, তখন এতদিন পরে এসে কেনো তার এমনটা মনে হলো?
রূপার অভিযোগ নিয়ে প্রযোজনা সংস্থা বা চ্যানেল কর্তৃপক্ষ মুখ না খুললেও মেয়েবেলা-র ক্রিয়েটিভ টিমের এক সদস্য রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে ফেসবুকে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন।
শুভময়ের কথায়,’এক মঙ্গলবার দুপুরে আচমকা শুটিং এঁর মাঝপথে বললেন ওনার ভালো লাগছে না শুটিং করতে। এটুকু বলে উনি বাড়ি চলে গেলেন।
গোটা মেয়েবেলা ইউনিট, তার প্রতিটা সদস্য, কী ভয়ানক বিপদের মুখে পড়লো উনি একবারও ভাবলেন না।
সম্প্রচারকারি চ্যানেলকে আমরা কী জবাব দেব সে কথা মনেও আনলেন না। যদিও চ্যানেল সব সময় আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ….উনি কারুর কোনও কথা কানেই তুলললেন না।
পরেরদিন চ্যানেল কতৃপক্ষ, মেয়েবেলার মূল রচয়িতা, প্রযোজক, পরিচালক সবাই ম্যারাথন মিটিং করলেন ওনার সাথে, ওনার বাড়ি গিয়ে।
উনি সিদ্ধান্ত নিলেন না। তখন আমরা জানি না বীথি হিসেবে উনি আছেন? নাকি নেই? আমরা দোলাচলে। উনি জানাবেন বললেন।
ওনাকে পরের বেশ কিছু এপিসোড লিখে লিখে পাঠানো হল, পরের গল্প পাঠানো হলো… এবং এক রাতের মধ্যে পাঠানো হলো, প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। আমিও সেই যুদ্ধের একজন সৈনিক।’
এরপর তিনি আরো লেখেন, ‘উনি সবটা পড়ে, সময় নিলেন……আমরা তখন বীথিকা মিত্রকে ছাড়া কীভাবে মেয়েবেলার এপিসোড তৈরি করা যায়, সেই লড়াই করছি।
টেলিকাস্ট বন্ধ হয়ে যাবে না হলে। এতগুলো মানুষের রুটি-রুজি বন্ধ হয়ে যাবে।… মেয়েবেলা প্রায় বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছিলো। বীথিকা মিত্রের চরিত্রে অভিনয়কারী মানুষটির শুরুর থেকেই তুঘলকি আচরণ ছিল।
আজ ভালো লাগছে না, আজ না অনেক সিন……… দিদি গো, ৭০/৮০ জন মানুষ এবং তাদের পরিবার দু’বেলা খেতে পায়, এই তোমার মেয়েবেলার জন্য।
মুড সুইং এঁর জন্য ইউনিটের কোন সদস্যের ৩ বছরের বাচ্চার দুধ বন্ধ হয়ে যায় দিদি। আপনি একটা গোটা ইউনিটকে বিপদে ফেলতে পারেন না।
আপনি একদিন হঠাৎ বলতে পারেন না, আমি আর শুট করবো না মেয়েবেলা। এটা একটা কাজ দিদি। এতগুলো মানুষের পেট চলে এটা দিয়ে।
আপনি আপনার মর্জি মত চলে গেলেন… ইউনিট এর কী হাল হলো খোঁজ নিয়েছিলেন? গোটা মেয়েবেলা ইউনিট নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছিল…
আমরা কেউ সরকারী চাকরি করি না।এভাবে দুম করে শুট অফ করে চলে যাওয়া যায়?আপনি একসাথে এত এত লোককে পথে বসিয়ে বললেন অসভ্যতা হচ্ছে গল্প নিয়ে। নাহ……………… মূল গল এটাই ছিল।
আপনার আসলে চরিত্র হিসেবেও কারুর সামনে নিচু করতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আপনি বীথিকা মিত্রের চরিত্র হয়ে নিচু হচ্ছেন। রিয়েল লাইফে নয়। শুরু থেকেই এই সমস্যা হয়েছে আমাদের।’
শুভময় কিছুটা অভিযোগ নিয়েই লেখেন প্রাক্তন বীথিকে ছাড়াই লড়াই চালিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ‘মেয়েবেলা’ টিম, সিরিয়াল বন্ধ হয়নি। বরং তাঁর বদলে হাল ধরেছেন অনুশ্রী দাস।
শুভময় এরপরেও লেখেন, ‘আপনি একটা ডেলি সোপকে প্রায় পথে বসিয়ে চলে গেলেন। তারা কী করে টেলিকাস্ট করবে এপিসোড , এটা ভাবলেন না।
তবুও কিন্তু মেয়েবেলা ইউনিট পারলো। আর সেটাই কী আপনার খারাপ লাগলো? আপনার বদলে অনুশ্রী দাস এলেন। শুধু এলেন না… এলেন…………দেখলেন এবং মেয়েবেলাকে পুনরুজ্জীবিত করলেন।
এটাই কী আপনার সত্তাকে আঘাত করলো? মেয়েবেলা থামবে না। কে আছে, কে নেই… এভাবে তারা ভাববে না। মেয়েবেলার গল্প পথ হারিয়েছে, বা দিকশুন্যপুরের দিকে যাত্রা করেছে। এ কথা অবান্তর এবং অবাস্তব।’
প্রথম দিন থেকেই মউয়ের প্রতি বীথি মাসির অত্যাচারের সূচনা হয়েছিল। শুভময় লেখেন, ‘মেয়েবেলা টেলিকাস্ট হতে শুরু করার একেবারে গোড়ার দিকে বীথি মৌ এর জন্মদিন সেলিব্রেশানের সিকোয়েন্সে মউকে প্রায় চড় মেরে বসে।
হাত ধরে হিড়হিড় করে টেনে নিচে নিয়ে আসে …… এক্কেবারে শুরুর এপিসোডেই বীথি মৌকে ‘অসভ্য’ মেয়ে হিসেবে আখ্যা দেয়।
মৌ যেন কোনও ভাবেই ডোডোর ছায়া না মাড়ায় সেই বক্তব্য পেশ করে। এই এত-শত সো কলড নেগেটিভ কান্ড কিন্তু বীথি শুরু থেকেই করে আসছে। তাহলে আজ হঠাত বীথি মউ এর প্রতি নেগেটিভ আচরণ করছে, এই কথা উঠছে কেন?’
এমনকি মৌ কে দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করার ঘটনা গল্পে ঢুকিয়েছিলেন স্বয়ং রূপা গঙ্গোপাধ্যায় (Rupa Ganguly), এমনটাও তথ্যও ফাঁস করেন ‘মেয়েবেলা’ টিমের এই সদস্য।
Image source-Google