বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ১৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কর্নাটকের হিজাব মামলার (Hijab Case) রায় ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল।যদিও রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দুই বিচারপতির মধ্যে চূড়ান্ত মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়।দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের পক্ষে রায় দেন বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত।কিন্তু,অন্য বিচারপতি সুধাংশ ধুলিয়া মামলাকারীদের আবেদন মেনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।এভাবেই দুই বিচারপতির মধ্যে দ্বিমত তৈরি সৃষ্টি হয়।ফলে হিজাব মামলা পাঠানো হল উচ্চতর বেঞ্চে।
প্রসঙ্গত,বছরের গোড়াতেই হিজাব পরে শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে সংবাদ শিরোনামে এসেছিল কর্নাটক। মূলত জানা গিয়েছিল গত ৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল কর্ণাটক সরকার।এরপর থেকেই সেরাজ্যে বিক্ষোভ শুরু হয় হিজাব ইস্যুতে।বিশেষ করে উদুপি জেলায় বিক্ষোভের জেরে স্কুল-কলেজগুলি রীতিমতো রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করেছিল।নির্দেশিকা নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল দক্ষিণের রাজ্যটিতে। মুখোমুখি সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয় বিভিন্ন এলাকায়।তারপর তা নিয়ে মামলা গড়ায় কর্নাটক হাইকোর্টে।
হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, হিজাব পরা কখনওই ধর্মাচরণের প্রয়োজনীয় অঙ্গ হতে পারে না। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেন মুসলিম ছাত্রীরা। এরইমধ্যে কর্নাটক সরকার শিক্ষাঙ্গনে পোশাক সংক্রান্ত বিধি জারি করে। তাতে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের ঠিক করে দেওয়া পোশাক পরেই ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে যেতে হবে। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পোশাকের কোনও নির্দিষ্ট বিধি নেই, সেখানে এমন কোনও পোশাক পরে যাওয়া যাবে না যা স্বাভাবিক পরিবেশকে বিঘ্নিত করে।কর্নাটকে যখন হিজাব বিতর্ক তুঙ্গে তখন পাল্টা হিন্দুত্ববাদীরা গেরুয়া উত্তরীয় গলায় ক্লাসে যাওয়া শুরু করেন।
কর্নাটক সরকার ওই নির্দেশিকায় উল্লেখ করেছিল, হিজাব, গেরুয়া উত্তরীয় কোনওটাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলবে না। হাইকোর্ট তাতে সিলমোহরও দেয়।এদিনের রায়ে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত মুসলিম ছাত্রীদের আবেদন খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের রায়ে সহমত জানান। কিন্তু বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা উল্লেখ করে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার বিষয়টিতে গুরুত্ব আরোপ করেন। তাঁর মতে, মুসলিম ছাত্রীদের বক্তব্যের যৌক্তিকতা রয়েছে।
মূলত,এদিনের শুনানির দিকে কার্যত তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ।কিন্তু এদিন হিজাব মামলার নিষ্পত্তি হল না।এখন উচ্চতর বেঞ্চ কী বলে সেটাই দেখার।