রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক বার অভিযোগ করা হয়েছে, একাধিক বিল আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)।তাঁর সম্মতি না থাকায় বিলগুলিকে আইনে পরিণত করা সম্ভব হয়নি। এবার এ বিষয়ে ট্যুইট করলেন রাজ্যপাল।

 

ট্যুইট করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) জানান, ‘বিধানসভার সচিবালয়ের পক্ষে ভারতীয় সংবিধানের ২০০ অনুচ্ছেদের অধীনে বিবেচনার জন্য যে বিলগুলি পাঠানো হয়েছে তা অসম্পূর্ণ।’ আবার, অপর এক ট্যুইটে তিনি জানান,’বিধানসভা থেকে স্পষ্টভাবে সম্মতির অসম্পূর্ণতার কারণে বিধানসভায় ফেরত আসা কোনো বিল বিবেচনার অপেক্ষায় নেই। বিলটির উপর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিতর্কের সম্পূর্ণ অফিসিয়াল প্রতিবেদনটি প্রস্তুত হওয়ার সাথে সাথেই প্রেরণ করা হবে।’

 

এদিকে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সমস্ত তথ্যই তাঁকে পাঠানো হয়েছে। তাঁর মন্তব্য ভিত্তিহীন। স্পিকারের দাবি আগের রাজ্যপালেরা সাধারণত বিল পেলেই তা পড়ে পাশ করার বিষয়ে তাঁদের মতামত জানাতেন। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে জগদীপ ধনখড় বিল পাশের আগে বিধানসভার সমস্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রক্রিয়ার বিশদ বিবরণ চান।স্পিকারের দাবি, রাজ্যপালের দাবি মেনে সবটাই পাঠানো হয়েছে তাঁকে। স্পিকার আরো বলেন, ” অথচ বাংলায় জবাব পেলে উনি ইংরেজিতে টুইট করেন। উনি বলেন আমি বাংলা জানি না। কী অদ্ভুত! তবে যে ভাষায় বলেছেন তা সঙ্গে সঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার ট্রান্সলেট ভার্সনে যাবে। আগের কোনও কোনও রাজ্যপালের ক্ষেত্রে এই প্রসঙ্গ আসেনি। তবে উনি আইন অনুসারে চাইতেই পারেন। আজ পর্যন্ত কোনও রাজ্যপাল এমন করেননি।”

 

প্রসঙ্গত এবারের বাদল অধিবেশনে বিধানসভায় ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি লজ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল, ২০২২, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি লজ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২, ওয়েস্ট বেঙ্গল কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় লজ সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২, রাজ্য প্রাণী ও মত্‍স্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় লজ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২, ওয়েস্ট বেঙ্গল ল্যান্ড রিফর্মস অ্যান্ড টেন্যান্সি ট্রাইব্যুনাল অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২, ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্য়াক্সেশন ট্রাইবুন্যাল অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২, দ্য আলিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২ এ ৮ বিল নিয়েই বাড়ছে চাপানউতর। ওয়াকিবহাল মহলের মতে এই ৮ বিলেই অনেকটাই খর্ব হচ্ছে রাজ্যপালের ক্ষমতা। এদিকে এই বিল আইনে পরিণত করতে গেলে সই লাগবে খোদ রাজ্যপালেরই। তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বরপূর্ণ হচ্ছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি লজ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল। এই বিলের বলেই রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য হওয়ার ক্ষমতা পাচ্ছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, এই ধরনের বিল দেখে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল। যে কারণেই এখনো তিনি সেই বিলগুলিতে স্বাক্ষর করেননি। আর যার ফলে বিলগুলিকে আইনে পরিণত করতে পারেনি রাজ্য সরকার।সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত কি হয় এখন সেটাই দেখার।

 

আরো পড়ুন:Jagdeep Dhankhar:রাজ্যপাল নিজের পদ কর্দমাক্ত করছেন,অভিযোগ শাসকদলের!