এবার আলিপুর জেল পরিনত হলো আলিপুর মিউজিয়ামে।বুধবার বিকেলে আলিপুর মিউজিয়ামের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।উল্লেখ্য,গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ নতুন নয়।নেতাজির অনেক ফাইল এখনও প্রকাশ্যে আনেনি কেন্দ্রীয় সরকার।ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে মঙ্গল পাণ্ডে সম্পর্কে ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছিল।মুঘল শাসনব্যবস্থা নিয়ে নানা সময় নানা মন্তব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মুখ থেকে শোনা গিয়েছে।যা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি।পাশাপাশি কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের আমলে বিভিন্ন ইতিহাসিক জায়গার নামও বদল করা হচ্ছে।বুধবার এই নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, -“রাজনৈতিক স্বার্থে দেশের ইতিহাস-ভূগোল বদল করে দেওয়া হচ্ছে।সেই কারণে স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আমরা এই মিউজিয়াম করলাম, যাতে নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে আসল সত্যটা জানতে পারে।” তবে কাওকে উদ্দ্যেশ্যে করে না বললেও বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছিল বিজেপি তথা কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের সমালোচনা করতেই এমন মন্তব্য করেন এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।প্রসঙ্গত,আদিগঙ্গার পাড়ের ১৯০৬ সালে তৈরি হয় এই ভবন।ব্রিটিশ জমানায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, জওহরলাল নেহরু, বিধানচন্দ্র রায়ের কখন না কখন এই জেলে ছিলেন।তাঁদের ব্যবহৃত কুঠুরি ‘হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে চিহ্নিত করা রয়েছে।কুঠুরিগুলির সামনে তাঁদের নামের ফলক বসেছে।ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রেখেই এই মিউজিয়াম তৈরি হয়েছে।

মূলত,বেশ কয়েক বছর আগেই আলিপুর সংশোধনাগার থেকে বারুইপুর সংশোধনাগারে বন্দিদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।মূল ফটকের বসানো হয়েছে আলিপুর মিউজিয়ামের বোর্ড। রাজ্যে একাধিক সংগ্রহশানা থাকলেও এই প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবন সম্বন্ধীয় মিউজিয়াম তৈরি হয়েছে।এখানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহরু, চিত্তরঞ্জন দাস, বিধানচন্দ্র রায়ের ব্যবহৃত কুঠুরিকে সংস্কার করা হয়েছে। রাখা হয়েছে তাঁদের ব্যবহৃত সামগ্রী। তত্‍কালীন ছবি, ফোটো।আলিপুর জেলেই ফাঁসি দেওয়া হয় স্বাধীনতা সংগ্রামী অনন্তহরি মিত্রকে।ফাঁসি হয় প্রমোদরঞ্জন চৌধুরী, দীনেশ গুপ্ত-সহ অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামীদের।সেই ফাঁসির মঞ্চও নতুনভাবে গড়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলা না থাকলে দেশে নবজাগরণ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, সংস্কার হত না।গান্ধীজির সঙ্গে বাংলার নীবিড় যোগ সূত্রের কথা স্মরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী।এর সাথে আলিপুর মিউজিয়াম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পাক, সেটা চান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আলিপুর জেলের সংগ্রহশালা অন্যতম ট্যুরিস্ট স্পট। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ঐক্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদানের কথা স্মরণ করেন মমতা। বলেন, একটি গানের মাধ্যমে দেশকে একসূত্রে বেঁধেছেন রবীন্দ্রনাথ। দেশের জন্য যাঁরা আত্মবলিদান দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বলেন, “নেতা কেমন হবেন? যিনি মানুষে মানুষে বিভেদ না করে সবাইকে সমান চোখে দেখবেন। আর নেতাদের মতাদর্শ আলাদা হলেও, তাঁদের সম্মানের জায়গা এক।”

 

আরো পড়ুন:মুখ্যমন্ত্রীMamata Banerjee:নবান্ন অভিযানে আহত পুলিশ কর্মীকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী!