ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি।শনিবার সকাল থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমুল উত্তেজনা।বিক্ষোভে জেরে আহত হন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।সূত্রের খবর,অশান্তির আঁচটা তীব্র হচ্ছিল শুক্রবার বিকাল থেকেই।শিক্ষামন্ত্রী ক্যাম্পাসে পা রাখলে যে জোরালো ভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি তোলা হবে তা আগাম জানিয়েছিল এসএফআই।ঠিক তেমনটাই হলো।
শনিবার ওয়েবকুপার একটি বৈঠকে যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।বৈঠক শেষে বেরোনোর সময়, বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা তাঁর গাড়ির চাকা খুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মন্ত্রী নিজেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যান, কিন্তু উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে।বিক্ষোভকারীরা ব্রাত্য বসুর গাড়ি ঘিরে ধরে “গো ব্যাক” ও “চোর-চোর” স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি এবং তাঁর সঙ্গে থাকা দুই পাইলট কারে ভাঙচুর চালানো হয়। গাড়ির কাচ ভেঙে কাচের টুকরো গায়ে লেগে আহত হন মন্ত্রী, পরে তিনি চিকিৎসার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে যান।শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে থাকা তৃণমূলপন্থী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার সদস্যদের উপরও হামলা হয়। সংঘর্ষের সময় এক মহিলা অধ্যাপকের শাড়ি ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রকে লাঠি হাতে ধাওয়া করে কিছু ছাত্র, পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীরা।
ঘটনার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ব্রাত্য বসু বলেন, “এই গুন্ডামি চলতে পারে না। পড়ুয়াদের চারজন প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে পারি, কিন্তু সবাই মিলে যদি এভাবে হামলা চালায়, তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।” তিনি আরও বলেন, “আমরা চাইলেই পুলিশ ডাকতে পারতাম, কিন্তু শিক্ষাঙ্গনে পুলিশের প্রবেশ আমি চাই না।”
ঘটনার আগে থেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো-এসএফআই, আইসা ও ডিএসএফ-প্রতিবাদ জানাচ্ছিল। পাল্টা, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) মানববন্ধন তৈরি করে। বিক্ষোভের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেট দিয়ে ঢোকানো হয় এবং তিনি পেছনের রাস্তা দিয়ে ওপেন এয়ার থিয়েটারের বৈঠকে যোগ দেন।
প্রসঙ্গত,যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের ছাত্র সংগঠন কার্যকর। বামপন্থী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে তৃণমূলপন্থী সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছে। এ দিনের ঘটনা সেই রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে আরও উসকে দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।