বিশ্ব অর্থনীতিতে এক নতুন দিশার পথ দেখিয়েছে ভারত।নয়াদিল্লির ভারত মণ্ডপে চলছে ‘এনএক্সটি’ শীর্ষ সম্মেলনে।শনিবার এনএক্সটি সম্মেলনের বক্তৃতায় ইন্ডিয়া-মিডিল ইস্ট-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে এমনটাই জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।তিনি জানান,-এই মুহূর্তে ভারতের দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।নানা প্রান্ত থেকে তাঁরা বিনিয়োগ করছে করছে ভারতে।প্রধানমন্ত্রীর কথায়,-“বিগত কয়েক দশক ধরে ভারতকে তাদের ব্যাক অফিস বলে মনে করত বিশ্ব।কিন্তু, বর্তমানে ভারত বিশ্বের কর্মশক্তি নয়।বরং,বিশ্বের শক্তিতে পরিণত হয়েছে।”

এদিন নরেন্দ্র মোদী বলেন,-প্রতিদিন নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি করছে ভারত।গত ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রয়াগরাজে ঐক্যের মহাকুম্ভ সমাপ্ত হয়।নদীর তীরে নির্মিত একটি অস্থায়ী স্থানে লক্ষ লক্ষ মানুষ কীভাবে পবিত্র স্নান করতে আসেন তা দেখে বিশ্ব অবাক। বিশ্ব ভারতের সংগঠন এবং উদ্ভাবনী দক্ষতার দিকে নজর রাখছে।ভারত মণ্ডপে এনএক্সটি কনক্লেভ ২০২৫-এ বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন,-“মিডিয়া হাউস আয়োজিত পূর্ববর্তী শীর্ষ সম্মেলনগুলি নেতা-কেন্দ্রিক ছিল। আমি খুশি যে, এই সম্মেলন নীতি-কেন্দ্রিক। এখানে নীতিমালা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমি দেখতে পাচ্ছি এই শীর্ষ সম্মেলন আগামীকালের জন্য নিবেদিত। মাত্র কয়েক মাস আগে ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৬০ বছর পর যখন ভারতে একটি সরকার টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় ফিরে আসে, তখন এটি ঘটে। এই জনসাধারণের আস্থার ভিত্তি হল গত ১১ বছরে ভারতের অনেক অর্জন।”

মোদি এদিন বলেন,-“আমি নিশ্চিত যে, এই কনক্লেভ ভারতের বাস্তব কাহিনীগুলি বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে। এই কনক্লেভে ভারত যেমন আছে তেমনই দেখাবে, কোনও রঙ যোগ না করেই। আমাদের মেকআপের দরকার নেই। বহু বছর আগে আমি দেশের সামনে ভোকাল ফর লোকাল এবং লোকাল ফর গ্লোবালের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছিলাম। আজ আমরা এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত হতে দেখছি। আজ আমাদের আয়ুষ পণ্য এবং যোগব্যায়াম স্থানীয় থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। আজ ভারতের সুপারফুড, আমাদের মাখানা, স্থানীয় থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। ভারতের বাজরা শস্য স্থানীয় থেকে বিশ্বব্যাপীও ছড়িয়ে পড়ছে।”

প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন,-“ভারত বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম কফি রফতানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। কয়েক দশক ধরে, বিশ্ব ভারতকে তাদের ব্যাক অফিস বলত, কিন্তু আজ, ভারত বিশ্বের নতুন কারখানায় পরিণত হচ্ছে। আমরা কেবল একটি কর্মীবাহিনী নই, আমরা একটি বিশ্বশক্তি। আজ ভারত অনেক বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করতে সক্ষম এবং সেগুলি অর্জন করছে। তাই এর মূলে একটি বিশেষ মন্ত্র রয়েছে। এই মন্ত্রটি হল- ন্যূনতম সরকার, সর্বোচ্চ শাসন। এটিই দক্ষ ও কার্যকর শাসনের মন্ত্র। গত দশকে, আমরা প্রায় ১,৫০০টি আইন বাতিল করেছি, যা তাদের গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছিল। এই আইনগুলির অনেকগুলি ব্রিটিশ শাসনামলে তৈরি হয়েছিল।”পাশাপাশ মোদি এদিন বলেন,-“সেই সময়ের (কংগ্রেস আমল) সরকার এবং নেতাদের সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই, তবে আমি এই লুটিয়েন সম্প্রদায়, এই খান মার্কেট গ্যাং দেখে অবাক হই। ৭৫ বছর ধরে এই আইনের ব্যাপারে এই লোকেরা কেন চুপ ছিল!আমাদের সরকারই দাসপ্রথার যুগের আইন বাতিল করেছে।”তিনি আরও বলেন,-“বিশ্বের একাধিক শীর্ষ সম্মেলনের নেতৃত্ব দিয়েছে ভারত।সম্প্রতি ফ্রান্সে আয়োজিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত একটি সম্মেলনে আমি যোগ দেওয়ার সুযোগ পাই।সেই সম্মেলনের সহ-উদ্যোক্তা ছিল ভারত।জি-২০ সম্মেলনের আয়োজনেও সফলতা পেয়েছে ভারত।ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডরের মাধ্যমে বিশ্বকে একটি নতুন অর্থনৈতিক পথ দেখিয়েছে ভারত।”