কলকাতা শহরে ভর দুপুরে বিপদে পড়লেন দুর্নিবার সাহা ও তাঁর স্ত্রী ঐন্দ্রিলা সেন ওরফে মোহর। রাস্তাতেই দুর্নিবার-মোহরের উপর চড়াও হয় একদল লোকজন। দুর্নিবারের গলা চেপে ধরে তাঁরা। ঠিক কী ঘটেছে সেবিষয়টি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন গায়ক দুর্নিবার সাহা।
ফেসবুকে একটা ভিডিয়ো পোস্ট করেন গায়ক দুর্নিবার সাহা (Durnibar Saha)। তাঁকে সেখানে বলে শোনা যায়, ‘আমি দুর্নিবার, আমার সঙ্গে আছে মোহর। আমাদের সঙ্গে ঠিক এক ঘণ্টা আগে (যখন ঙিডিয়োটা করা হয়েছিল, তখন থেকে ১ ঘণ্টা আগে) ৯৯ নম্বর ওয়ার্ড, নেতাজীনগর থানার মধ্যে পড়ে একটা জায়গা। নাকতলার ভিতরে একটা রাস্তায় মোড়ে খুব খারাপ একটা ঘটনা ঘটে। আমরা আমাদের সারমেয়কে নিয়ে গ্রুমিং সেন্টারে যাচ্ছিল। যেহেতু একটা সময়ের বিষয় ছিল। ওরা রাস্তায় কাজ করছিল। দুপুর বেলা ৩টের সময়। অথচ কোথাও কোনও স্টপ সাইন নেই। রোড ব্লকেজ নেই। এটা কনট্রাক্টরের দায়িত্ব। যদিও তিনি এখানে ছিলেন না। আমরা ৫-৬বার হর্ন দেওয়ার পড়ে গাড়ির কাচ নামিয়ে বলি, এটা দুপুরবেলা, রাস্তা ঠিক করার সময় নয়। সরে যান গাড়িটা যেতে দিন। তখনই তাঁরা তেড়ে আসেন।’
দুর্নিবার (Durnibar Saha) আরও বলেন, ‘আমি তখন ওদের সঙ্গে কথা বলার জন্য গাড়ি থেকে নামতে বাধ্য হই। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন ওরা আমার গলা চেপে ধরে (গলার দাগ দেখিয়ে)। আমার গলায় ভীষণ ব্যাথা, এখনও ঢোঁক গিলতে পারছি না। আমার হাতেও দাগ দেখতে পাবেন। নিজে বাঁচতে আমিও হামলাকারীদের একজনের গলা ধরি। তখন ওঁরা ৩-৪জন মিলে টেনে হিঁচড়ে রাস্তার উল্টোদিকে নিয়ে যান। মোহর তখনও নামেনি, ও বেগতিক দেখে নামে। ও যখন নামে তখনও আমার একজন গলা চেপে ধরে আছে, হাত ধরে আছে। যাতে আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর মোহরকে সেখান থেকে আমি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে ও সাহসের সঙ্গে বলে, যদি পারেন তো আমার গায়ে হাত দিয়ে দেখান। আমি ওর প্রতি কৃতজ্ঞ। ওকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এরপরে ঘটনাস্থলে থাকা একজন মহিলা মোহরকে ধাক্কা দেয়। মোহরের তাতে হাতে ব্যাথা লাগে। তখন রাস্তায় লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তখন ভর দুপুরবেলা। ওরা একটা ডাল নিয়ে আমার উপর তেড়ে আসে। তাতে হাতের চামড়া উঠে গেছে। হয়ত শারীরিকভাবে খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। তবে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। আমি সকলকে অনুরোধ করব, যাঁদের চোখে মুখে অশিক্ষার ছাপ আছে, তাঁদের থেকে দূরে থাকবেন।’ সব শেষে দুর্নিবার জানান, যাঁরা রাস্তায় কাজ করছিলেন, তাঁরা কিন্তু কোনও মিস্ত্রী নন, স্থানীয় বাসিন্দা।
দুর্নিবারের কথা শেষ হতেই মোহর বলেন, ‘এত কিছুর পরে বলব, কিছু ভালো মানুষ হয়ত আছে। ওই যে ভদ্রলোক, আমাকে দেখে কাঁদতে শুরু করেছিলেন। বলেন, মা তুমি গাড়িতে গিয়ে বসো, চতুর্দিকে যা হচ্ছে, বুঝতে পারছি না কেন হচ্ছে, তুমি প্লিজ গাড়িতে বসো। তবে হ্য়াঁ, আমরা সত্যিই খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কলকাতা, কলকাতার বাইরে সব জায়গায় হয়ত। আমিও এখনও বিষয়টা থেকে বের হতে পারছি না।ভর দুপুর বেলা! কী বলব লোককে কেউ কখনও বাইরে বের হবেন না!’ তবে সবশেষে দুর্নিবার জানান, তাঁরা এই মুহূর্তে সুরক্ষিত।
আরো পড়ুন: Recipe: স্বাদ বদলাতে বাড়িতে বানিয়ে নিন মাটন রেজালা
Image source-Google