দিনের পর দিন ফেলে দেওয়া বাতিল বোতল, নারকেল মালা দিয়ে সুর বেঁধে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন শ্রীরামপুরের (Sreerampur) মনাথ। হ্যাঁ বিশ্বাসযোগ্য নাহলেও, এটাই সত্যি! মানুষের ফেলে দেওয়া জিনিস কুড়িয়ে তা থেকে সুরের তথা নানা বাদ্যযন্ত্রের সৃষ্টি করে চলেছেন স্রষ্টা সোমনাথ। অর্থাৎ বলাই যায়, সুর সৃষ্টি করতে দামী বাদ্যযন্ত্র নয়, প্রয়োজন শিল্পীর কল্পনাশক্তির। আর সেটাই দিনের পর দিন শ্রীরামপুরের বাড়িতে প্রমাণ করে চলেছেন এলাকায় পরিচিত জলতরঙ্গ শিল্পী সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে তিনি একাই নন, তাকে সাহায্য করতে উদ্ধত হয়েছেন তার ছেলেও। ইতিমধ্যেই তিনি ফ্লোর টাইলস দিয়ে সিরমিক টাইলস তরঙ্গ, কাচ দিয়ে কাচতরঙ্গ, সসের বোতল দিয়ে বোতলতরঙ্গ, ঠান্ডা পানীয়ের বোতল দিয়ে প্লাস্টিক বোতল তরঙ্গ নামের বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে ফেলেছেন। যেগুলি ইতিমধ্যেই মানুষকে বেশ মুগ্ধ করেছে। সারা বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তার তৈরি বিভিন্ন ধরনের শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে অনুষ্ঠান করে থাকেন সোমনাথ। জানা যায়, সোমনাথের বাবা নীরদবরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন একজন বিখ্যাত জলতরঙ্গ শিল্পী। যিনি নিজে বাঁশ দিয়ে বাঁশতরঙ্গ এবং কাঠ দিয়ে কাঠতরঙ্গ তৈরি করেছিলেন। সোমনাথ মাত্র ১২ বছর বয়সে বাবাকে হারান। এক সময় বাবার তৈরি বাঁশতরঙ্গ নিয়েই বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করতেন সোমনাথ। তারপর ধীরে ধীরে নিজেই মগ্ন হয়ে পড়েন নিজের সৃষ্টিতে।

তার ফেলে দেওয়া নারকেল মালা দিয়ে তৈরি জলতরঙ্গ, ড্রামসেট, একতারা, বাংলা ঢোল, তবলা, সেতার, তানপুরা-সহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র ইতিমধ্যেই প্রশংসা পেয়েছে সকলের কাছে। তবে, এখন তিনি শুধু বাদ্যযন্ত্র শিল্পী-ই নয়, হস্তশিল্পীও বটে। কারণ, বাদ্যযন্ত্র তৈরি পাশাপাশি নারকেল মালা দিয়ে ঘর সাজানোর বিভিন্ন উপকরণও ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। বর্তমানে সুর আর শিল্পের চর্চাতেই নিজেকে ব্যাস্ত করে রেখেছেন শ্রীরামপুরের সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সৃষ্টি প্রশংসা কুড়াচ্ছে মানুষের।

 

আরো পড়ুন:Panchayat Election:রাজনীতি বোঝার আগেই পেটের টানে দেওয়াল লিখছেন দশম শ্রেণীর ছাত্রী!ভোটার না হয়েও ভোটের সাথে জড়িত ওতপ্রোতভাবে