ইদানীং মার্কিন মুলুকের স্কুলগুলিতে বন্দুকবাজেদের হামলা বা পড়ুয়াদের পণবন্দি করার দৃশ্য নজরে আসছে। কিন্তু, এবার বাংলায় তথা ভারতেও দেখা গেল এমন দৃশ্য। বুধবার মালদহের (Malda) মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুলের ক্লাস রুমে পিস্তল হাতে ঢুকে পড়তে দেখা গেল এক ব্যক্তিকে। তবে শুধু পিস্তলই নয়, তাঁর সঙ্গে ছিল অ্যাসিড বোমাও। কিন্তু কী কারণে এমন কাণ্ড ঘটালেন ওই ব্যক্তি?

জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম দেব বল্লভ। তাঁকে বন্দুক হাতে দেখে ভয়ে জবুথবু হয়ে পড়ে সপ্তম শ্রেণির কচিকাঁচারা। বন্দুক উঁচিয়ে হুমকি দিতে শুরু করেন উপস্থিত সকলকে। পড়ুয়ারা এ ঘটনায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে মালদা থানায় খবর দেন শিক্ষকরা। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। এরপর নানা রকম ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বলতে শুরু করেন ওই ব্যক্তি। পুলিশ তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এরই মধ্যে বন্দুকের নল উপেক্ষা করে এক পুলিশকর্মী গিয়ে ওই ব্যক্তিকে জাপটে ধরেন। পিছন পিছন ছোটেন বাকি পুলিশকর্মীরাও। সেই সময় তাঁর জামাকাপড় হাতড়ে দেখতে গিয়ে চমকে ওঠেন পুলিশ কর্মীরা! ট্রাউজার্স তুলে দেখা যায়, পায়ে একটি চাকু বাঁধা রয়েছে। এরপর আগ্নেয়াস্ত্রগুলি উদ্ধার করে আটক করা হয় ওই ব্যক্তিকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই স্কুলের পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা সবাই নিরাপদে আছেন। যুবকের কাছ থেকে সব অস্ত্রশস্ত্রই উদ্ধার হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ যাদব বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে ওই যুবকের পারিবারিক কিছু সমস্যা আছে। উনি আগেও এরকম ঘটনা ঘটিয়েছেন। ফেসবুকে হুমকি দিয়েছিলেন। সেই সময় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারও করে।’’ পুলিশ সুপার আরও জানান, কীভাবে ওই শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ঢোকেন সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কোনও অভিভাবকের পরিচয় দিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন কিনা, তা তদন্তসাপেক্ষ। আটক হওয়া ওই ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ব্যাগ এবং আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মুচিয়া চন্দ্রমোহন স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি। এলাকায় এই স্কুলের যথেষ্ট পরিচিতিও রয়েছে। মালদা নালাগোলা রাজ্য সড়ক লাগোয়া এই স্কুল। ফলে ঘটনার খবর এদিন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে গোটা মালদহ জেলায়। খবর পৌঁছেছে নবান্নেও। গোটা ঘটনার কথা জানার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘পুলিশ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ভালো কাজ করেছে।’’ সেই সঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন ঘোষণাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিরাপত্তার জন্য স্কুল কমিটিগুলির কাছে ২ জন করে দারোয়ান রাখার পরামর্শও দেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

আরো দেখুন:Purba Medinipur:দুই লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ,দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল আগুন!মৃত ১