এবার ইডির (ED) নজরে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষের স্ত্রী জয়শ্রী ঘোষ।গত মঙ্গলবারই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত কুন্তলের স্ত্রী জয়শ্রী ঘোষকে নোটিস পাঠিয়েছিল সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।নোটিসে দু-এক দিনের মধ্যে জয়শ্রীকে ইডি-র দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল।সঙ্গে আনতে বলা হয়েছিল ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত নথিপত্র।এদিকে নোটিশ পাঠানোর একদিনের মধ্যেই অর্থাৎ বুধবারই ইডির দপ্তরে হাজিরা দিলেন কুন্তলের স্ত্রী জয়শ্রী।এদিন বেলা ১১ টা ২০ নাগাদ জয়শ্রী সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির সদর দফতরে যান।যদিও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতরে ঢোকার সময় কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দেননি তিনি।একপ্রকার সাংবাদিকদের না দেখার ভান করেই এগিয়ে যান তিনি।মূলত,তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্নীতির আরও গভীরে পৌঁছতে চাইছে ইডি।
ইডি সূত্রে খবর,শুধু ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত নথিপত্র নয়,আরো বেশ কিছু বিষয়ে তথ্য জানতে জয়শ্রীকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।তদন্তকারীরা আরো জানান,- চাকরির বদলে টাকা নিয়ে তা প্রায় ৭৫টি অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছিল কুন্তল।এমনকি,টাকা এদিক ওদিক সরাতে স্ত্রী জয়শ্রীর অ্যাকাউন্টও কুন্তল ব্যবহার করত।এছাড়াও কুন্তলের একটি বিএড কলেজ এবং একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে।কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ডিরেক্টর হচ্ছেন কুন্তলের স্ত্রী। এই কলেজ এবং স্কুলের মাধ্যমে চাকরি ‘চুরির’ কালো টাকা কোনও ভাবে সাদা করা হয়েছিল কি না,তা জানতে চায় ইডি।এবং কুন্তলের বাড়িতে নাকি একাধিকবার চাকরি বিক্রি নিয়ে বৈঠকও হয়েছে।কে কে থাকত সেই বৈঠকে,কবে কবে সেই বৈঠক হয়েছে,জয়শ্রীর কাছে সেই তথ্য জানতে চাই ইডি।পাশাপাশি কুন্তলের বিনোদনমূলক ইউটিউব চ্যানেল ‘নবকথা ইনিশিয়েটিভে’র সঙ্গে জয়শ্রীর যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।এই বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।এবং তার বয়ান রেকর্ড বন্দি করা হয়।
প্রসঙ্গত,এর আগে কুন্তলের ফ্ল্যাটে তল্লাশির দিনেও তাঁর স্ত্রীকে ইডির প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছিল।এছাড়াও সংবাদমাধ্যমের কাছে বারাসতের শিক্ষা ব্যবসায়ী তাপস মণ্ডল সম্পর্কে একসময় মুখ খুলেছিলেন জয়শ্রী।কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে কুন্তল গ্রেফতার হওয়ার পর একাধিকবার লিখিত বিবৃতি দিয়ে জয়শ্রী তাপসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন।তিনি দাবি করেছিলেন,কুন্তলকে গ্রেফতার করার আগে তাঁদের যে ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি,সেই ফ্ল্যাটে দিনের পর দিন থাকতেন তাপস মণ্ডল।বিশেষত লকডাউনের সময় ওই ফ্ল্যাটে থেকে তাপস তাঁর কাজকর্ম চালাতেন বলেও দাবি করেছিলেন জয়শ্রী।ইডিকে সে বিষয়ে তদন্ত করার আর্জিও জানিয়েছিলেন তিনি।এদিকে মঙ্গলবারই তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে কুন্তল ঘোষকে।দলের যুবনেতা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন তিনি।আর দল থেকে বহিস্কার হওয়ার পরই তার পত্নীর ইডির দফতরে হাজিরা যে তার জন্য বড়সর কোনো নতুন বিপদ বা আরো কোনো নতুন জটিলতা আসতে চলেছে,তা বেশ ভালোই বুঝতে পারছে বিশিষ্টজনেরা।
আরো পড়ুন:TMC:মালদায় কাটমানি আদায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ স্থানীয় বাসিন্দাদের