কেন্দ্র যখন বিনামূল্যে রেশনের সব খরচ বহন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে,তাহলে রাজ্য সরকারকে টাকা দিতে হবে কেন?সম্প্রতি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ (Rathin Ghosh) এই দাবি তোলেন।আসলে কেন্দ্রীয় সরকার লোকসভা নির্বাচনের আগে চলতি বছর পুরোপুরি বিনামূল্যেই রেশনে চাল-গম দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।’প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’ নামে ১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে চালু হওয়া প্রকল্পের সব দায়িত্ব কেন্দ্র নেবে বলে জানানো হয়েছিল।বলা হয়েছিল, দেশের ৮১ কোটি ৩৫ লক্ষ গ্রাহকের যাবতীয় রেশন খরচ কেন্দ্রেরই।কিন্তু নতুন বছরের ২ মাস কেটে গেলেও রাজ্যের ভাঁড়ার থেকেই দিতে হচ্ছে অর্ধেক খরচ।এই অভিযোগ তোলেন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ।জানা গিয়েছে,বৈঠকে মন্ত্রীর সঙ্গে এদিন উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই খাদ্যসচিব পারফেজ আহমেদ সিদ্দিকি এবং অচিন্ত্যকুমার পোতি।

বৈঠকে মন্ত্রী বলেন,-“দোকানদের মার্জিন এবং রাজ্যের এক জায়গা থেকে অন্যত্র চাল-গম নিয়ে যেতে প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গের খরচ হয় ৩৮০ কোটি টাকা। কেন্দ্র যখন ফ্রি রেশনের সব খরচ বহন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাহলে এই টাকা আমাদের দিতে হবে কেন? কেন্দ্রকেই এই টাকা খরচ করতে হবে।” আরো বলেন,-“রক্তাপ্লতা কাটাতে কেন্দ্র রেশনে পুষ্টিযুক্ত চাল (ফর্টিফায়েড রাইস) দেবে বলে ঠিক করেছে, ভালো কথা। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ৬ কোটি বাসিন্দার বাইরেও রাজ্যের সব বাসিন্দাকে খাদ্যশস্য দেয় বাংলা। ‘রাজ্য খাদ্যসাথী’ প্রকল্প নামে সেটি চলে। যাতে খাদ্যশস্য পান তিন কোটি বাসিন্দা। আর এই অংশের জন্য চাল পুষ্টিযুক্ত করতে খরচ হয় বছরে ১২৫ কোটি টাকা। কেন্দ্র যদি এই খরচ দেয়, তাহলে সব বাসিন্দাই পুষ্ঠিযুক্ত চাল পেতে পারে।”

এরপরই বৈঠকে কেন্দ্রীয় খাদ্য রাষ্ট্রমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে, খাদ্যসচিব সঞ্জীব চোপড়াকে রাজ্যের মন্ত্রী বলেন,কোনও দোকানে তিন হাজার কার্ড থাকলে দোকানদারদের মাসে উপার্জন হয় মাত্র ১৬ হাজার টাকা। আজকের দিনে এতে সংসার চালানো কঠিন। তাই কুইন্টাল প্রতি দোকানদারদের কমিশন ১৯০ টাকা করা হোক। এখন যা আছে মাত্র ৯০ টাকা।সাথে রাজ্যের খাদ্যসাথী প্রকল্প চালাতে মাসে ৮০ হাজার টন গম ‘ওপেন মার্কেট সেল স্কিমে’ দেওয়ার দাবি করা হয়েছে।বলা হয়েছে,মান্ডিতে চাল সংগ্রহের জন্য শ্রমিকদের প্রতি কু‌ইন্টাল ১০ টাকার বদলে বাড়িয়ে ১২ টাকা হোক।বাড়ানো হোক চালকলে ধান থেকে চাল তৈরির মিলিং চার্জ।পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে রেশন দোকানদারদের কমিশন বৃদ্ধিরও দাবি করা হয়েছে।সব শুনে,এত দাবির পরেও কেন্দ্র কী করবে, তা এদিনের বৈঠকে স্পষ্ট করেনি মোদি সরকার। বলা হয়েছে, ভেবে দেখছি।

 

আরো পড়ুন:Kakoli Ghosh Dastidar:উন্নয়নের আবেদন পেয়েছি,কিন্তু কোন অভিযোগ পাইনি:সাংসদ কাকলি