২৪ ঘন্টা আগেই পার্ক দুর্নীতিকাণ্ডের স্বপক্ষে পাল্টা পুকুর ভরাটের অভিযোগ এনে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন বারাসত পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়।নির্দিষ্টভাবে তিনি পৌরসভার যে কটি ওয়ার্ডে পুকুর ভরাটের অভিযোগ করেছিলেন তার মধ্যে ২০ নম্বর ওয়ার্ডটি-ও ছিল প্রাক্তন চেয়ারম্যানের নিশানায়।যে ওয়ার্ডের পৌর প্রতিনিধি তথা পৌর পারিষদের দায়িত্বে আবার বর্তমান চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ পান্নালাল বসু।সেই অভিযোগের ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতে তার সত‍্যতা একেবারে সামনে চলে এল!

সূত্র মারফত খবর,পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের চন্দনআঁটি এলাকায় প্রায় ১০ কাটা জমির ওপর একটি পুকুর রয়েছে।যার মালিক তরুণ অধিকারী।অভিযোগ,সেই পুকুরের চারপাশ মাটি ও রাবিশ ফেলে ভরাট করার কাজ চলছে বেআইনিভাবে।এজন্য বেশ কয়েকজন শ্রমিককেও নিয়োগ করা হয়েছে সেখানে।শুধু তাই নয়,জল তুলতে শ‍্যালো মেশিনও বসানো হয়েছে পুকুরের মধ্যে।ভরাট করার মাটি আবার নিয়ে আসা হচ্ছে ছোট ১০৭ গাড়িতে করে।এসবই চলছে একেবারে প্রকাশ্যে।মাটি ও রাবিশ দিয়ে পুকুরের বেশ খানিকটা অংশ ইতিমধ্যেই ভরাট করে ফেলা হয়েছে।আর তারপরও প্রশাসন কিংবা স্থানীয় পৌর প্রতিনিধির কোনও ভ্রুক্ষেপ চোখে পড়েনি।বরং সংবাদমাধ্যমের অভিযোগের পরও বেমালুম তা অস্বীকার করার চেষ্টা করেছেন পান্নালাল বসু।পরে,অবশ্য অভিযোগ খতিয়ে দেখতে স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান তিনি।এরপর বৈধ কোনও অনুমোদন না থাকায় পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর।

এই বিষয়ে পান্নালাল বসু জানান,”পৌরসভার সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি এই বিষয়ে।ফলে,পৌরসভা জানত না পুকুর ভরাটের বিষয়টি।নিজের দায়িত্বেই জমির মালিক বেআইনিভাবে পুকুর ভরাট করছিলেন।তা জানতে পেরেই আমরা পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।নিয়ম রয়েছে পুকুরের চারপাশ গার্ডওয়াল দিয়ে তার আশপাশে মাটি ফেলা যেতে পারে।কিন্তু,কোনও ভাবেই পুকুর ভরাট করে নয়।জমির মালিককে বৈধ কাগজপত্র নিয়ে পৌরসভায় যেতে বলা হয়েছে।সেই কাগজপত্র খতিয়ে দেখার পর আইনানুগ যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা আমরা নেব”।

এদিকে,পুকুর ভরাটের অভিযোগ মানতে চাননি জমির মালিক তরুণ অধিকারী।তাঁর কথায়,”পুকুর ভরাট নয়। সংস্কারের কাজ চলছিল।যেটি পুকুর বলা হচ্ছে,সেটি আসলে বাস্তু জমি।তার সমস্ত কাগজপত্র রয়েছে।পৌরসভা দেখতে চাইলে দেখিয়ে দিতে পারি।কেন কাজ বন্ধ করা হল তা প্রশাসনই বলতে পারবে।কোনও আইন বিরুদ্ধ কাজ করিনি”।অন‍্যদিকে,এই ইস্যুতে তৃণমূল দলকে কাঠগড়ায় তুলে আক্রমণ শানিয়েছে গেরুয়া শিবির।বিষয়টি নিয়ে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্র বলেন,”তৃণমূলের প্রাক্তন চেয়ারম্যানের পুকুর ভরাটের অভিযোগের যে সত‍্যতা রয়েছে।তা এই ঘটনাতেই স্পষ্ট।বর্তমান পৌরবোর্ড ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জেলার সদর শহর বারাসতে একের পর এক পুকুর ভরাট হয়েছে।অথচ,পৌরসভার বর্তমান তৃণমূল চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় উদাসীন।এই পুকুর ভরাটের ঘটনায় জমির মালিকের সঙ্গে নিশ্চয় গোপন আঁতাত রয়েছে শাসকদলের কাউন্সিলর পান্নালাল বসুর।তা না হলে প্রকাশ্যে পুকুর ভরাট হতে পারেনা।আমরা চাই,জেলা প্রশাসন প্রাক্তন চেয়ারম্যানের অভিযোগ খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করুক”।

 

আরো পড়ুন:Shahnawaz Pradhan : হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন মির্জাপুর অভিনেতা শাহনওয়াজ প্রধান!