পাঁশকুড়ার ক্ষীরাই মানে রংবাহারি নানান ফুলের সমারোহ। যা ফুলের শহর হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। শীতকালীন ফুল বলতে চন্দ্রমল্লিকা,আস্টার, গ্ল্যাডিওলাশ, গাঁদা,সহ রকমারি কয়েক হাজার জাতের ফুল চাষ হয় ক্ষীরাই এর নদীপাড়ে। নানান ফুলের সমারোহে সেজে উঠেছে পাঁশকুড়া ক্ষীরাই শহর। আর তা ধীরে ধীরে একপ্রকার যেন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়ে উঠেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ফুলবাগান প্রেমীদের ওই ফুলের বাগানে ভিড় জমাতে দেখা যায়।
এমনকি বছরের শেষ থেকে নতুন বছরের শুরুতে পিকনিক করার হিড়িক পড়ে ক্ষীরাই এর নদীপাড়ে। রেল ব্রীজের নিচে সেজে ওঠা ফুলের বাহার মনে ধরেছে পর্যটকদের। সেজে ওঠা ফুলের বাগান দেখতে শয়ে শয়ে গাড়ি ঢুকতে শুরু করে ক্ষীরাই এলাকায়। ফুলের বাহারে সেজে থাকা বাগানে সেল্ফি তোলার পাশাপাশি, তাঁর পাশে বসে দীর্ঘসময় কাটানো ছিল ফুলপ্রেমী পর্যটকদের ভীষণ প্রিয়।
তবে নতুন বছরে বাধ সাধল বাগান দেখার। একদিকে বনলতার কারনে ফুলের বাগান সেজে উঠেছে দেরিতে তাঁর দোসর হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। দুয়ে মিলে ফুলের শহর পাঁশকুড়ার ক্ষীরাই এ বন্ধ হল পর্যটকদের যাতায়াত। যদিও নতুন বছরে মানুষের ভিড় জমতে শুরু করেছিল, কিন্তু করোনা মহামারীর কথা মাথায় রেখে পাঁশকুড়া পৌরসভা ও পাঁশকুড়া ১নং পঞ্চায়েত সমিতির আলোচনা সাপেক্ষে বন্ধ করা হয় ক্ষীরাইয়ের ফুল বাগানে পর্যটকদের আনাগোনা। মে কারনে একপ্রকার বিষাদের সুর বেজে উঠল পর্যটকদের মনে।
পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি হানিফ মহম্মদ বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশক্রমে ফুলের শহর ক্ষীরাই বন্ধ রাখা হয়েছে, করোনা মহামারী যেভাবে বাড়বাড়ন্ত হয়েছে সেখানে সংক্রমণের হার মারাত্মক আকার ধারণ করেছে তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে আমরা পাঁশকুড়ার ক্ষীরাই ফুলের বাগান বন্ধ রেখেছি। আপাতত জানুয়ারির ২০ তারিখ পর্যন্ত ফুলের বাগানে পর্যটকদের যাতায়াত বন্ধ থাকবে। ২০ তারিখের পর আলোচনা সাপেক্ষে তাঁর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পৌরসভার চেয়ারম্যান নন্দকুমার মিশ্র জানান করোনা মহামারীর গ্রাফ ভীষন ভাবে ছড়াতে শুরু করেছে, পাঁশকুড়ার ক্ষীরাই এর ফুল বাগানে হাজারেরও অধিক মানুষের ভিড় হয় , তাই কোভিড বিধি লঙ্ঘন যাতে না হয়, তাই আমরা ফুলের বাগানে পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।
তবে অন্যদিকে পাঁশকুড়ার এলাকার ফুল চাষিদের মাথায় হাত, কারন চাষিদের ফুল দেশ বিদেশে যেত তাও যেন বন্ধের মুখে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে র কারণে।
গতবছরে একই ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার ফুল নষ্ট হয়ে যায় জমিতেই। মাঝে করোনা মহামারী স্বাভাবিক হলে আশার আলো দেখতে পেয়েছিল চাষিরা। কিন্তু করোনার তৃতীয় ঢেউ ভয়ংকরভাবে বিস্তার করতে শুরু করলে,ফের লোকসানের মুখে পড়তে হয় ফুল চাষিদের।