নাওয়া-খাওয়া ভুলে জীবন্ত লাশে পরিণত হয়েছেন টেট (TET) উত্তীর্ণ আন্দোলনকারীরা।প্রায় ৪ দিন ধরে অব্যাহত তাদের আমরণ অনশন। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।তাঁর সঙ্গে আবার দেখা যায় প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালকেও।তাঁরা এসে এদিন অবস্থান বিক্ষোভকারী ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।

তারপরই সুকান্ত মজুমদার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিস্ফোরক মূলক মন্তব্য করেন। তার কথায়,সমস্যা তৈরি করেছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। টাটাকে নিজে ভাগিয়ে, বলছেন সিপিএম ভাগিয়েছে। উনি এবার নতুন বই লিখবেন ‘আমি কিছু করিনি ‘। এরপরই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্নবান ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘২০ হাজার পদে নিয়োগ হবে, কে বলেছিল?’

তারপরই রাজ্য সরকারকে আরো বিপাকে ফেলতে গিয়ে বলেন, ‘চাকরি তো সরকারকে দিতেই হবে। হয় কিছুদিনের মধ্যে এই সরকার দেবে, নয়তো আমাদের সরকার এসে দেবে’। তাঁর কথায়, ‘পর্ষদ যে অনার্য দাবির কথা বলছে তা প্রমাণ করতে হবে। সেই সময় মেরিট লিস্ট বের করা হয়নি। আমি নিজে যখন স্কুল সার্ভিস কমিশন দিয়েছিলাম, আমার নিজের একটা র‌্যাঙ্ক ছিল। আমার পেছনে থাকা কোনও ব্যক্তিকে যদি আগে চাকরি দেওয়া হয়, তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আমার কোর্টে যাওয়ার অধিকার আছে। দুর্নীতি করেছে রাজ্য সরকার। আপনারা নম্বর জানাননি, র‌্যাঙ্ক জানাননি। জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে, এই সরকারকে তাঁরা বেশিদিন রাখবে না’।এদিকে আবার ২০১৪ টেট উত্তীর্ণদের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ শুরু করেন ২০১৭ টেট উত্তীর্ণরাও।

এদিন সাড়ে বারোটা নাগাদ হঠাত্‍ই দেখা যায়, মেট্রোর সেক্টর ফাইভ স্টেশন থেকে বেরিয়ে দৌড়ে করুণাময়ীর পর্ষদ দফতরের দিকে ছুটছেন ২০১৭ সালের টেটে প্রার্থীরা। পুলিশ বাধা দিলেও তাদের আটকানো যায়নি। শেষে ১০ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে এসে বসে পড়েন তারা। ২০১৭-র টেট উত্তীর্ণদের দাবি, যোগ্যতার নিরিখে তারা এগিয়ে। তাই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাদের নিয়োগ দিতে হবে। তাদের যুক্তি,২০১৪ টেট উত্তীর্ণরা ২ বার নিয়োগের সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু ২০১৭ টেট উত্তীর্ণরা তা পাননি। আর ২০১৭-র পর তৈরি শূন্যপদে ২০১৪র টেট উত্তীর্ণদের কোনও অধিকার নেই। ২০১৭-র টেটে মাত্র ৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাশ করেছিল। তাদের মধ্যেও ৯০০০ এখনো নিয়োগ পাননি। তাদের আগে নিয়োগ দেওয়া হোক। তার পর বাকি শূন্যপদে নিয়োগ পাক ২০১৪ টেট উত্তীর্ণরা।ওদিকে ২০১৪ টেট উত্তীর্ণদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীই জানিয়েছিলেন ২০০০০ শূন্যপদে নিয়োগ পাবে ২০১৪ টেট উত্তীর্ণরা। সেই ২০০০০ নিয়োগ দিয়ে বাকি শূন্যপদে ২০১৭ টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেওয়া হোক। সব মিলিয়ে কয়েকশ মিটার দূরত্বে চলছে ২ পক্ষের আন্দোলন। নিজেদের দাবিতে অনড় দুপক্ষই।

এই নিয়ে সুকান্তবাবু দাবি করেন, ২০১৪ ও ২০১৭ সালের প্রার্থীদের আলাদা করেই নিয়োগ করা হোক। সঙ্গে প্রকাশ করা হোক মেরিট লিস্ট। এই যে ৮ বছর নষ্ট হল, সরকারকে তা পূরণ করতে হবে।

 

আরো পড়ুন:TET : টেট আন্দোলনকারীদের আবদারে নারাজ পর্ষদের