টাটা মেটালিক্সের সম্প্রসারিত কারখানার উদ্বোধনে খড়গপুর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জানা যায়, খড়গপুর স্টেডিয়ামে আয়োজিত ওই কর্মসূচি থেকে টাটা স্টিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জীব পলের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেন খড়্গপুরের অদূরে টাটা মেটালিক্সের নয়া ইউনিটের। পাশাপাশি, ওই কর্মসূচিতে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের হাতে চাকরির নিয়োগপত্রও তুলে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে।আর এদিনের এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের আশাও রাখলেন তিনি।
খড়গপুরের অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ”এখন টাটা মেটালিক্স আরও ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। আগামী দিনে তা আরও বাড়বে।” টাটা মেটালিক্সের ওই নতুন ইউনিটে আরও হাজার জনের চাকরির সুযোগ হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। মমতার বক্তৃতার সময় মঞ্চে হাজির ছিলেন সঞ্জীব-সহ টাটা শিল্পগোষ্ঠীর আধিকারিকেরা।
পুজোর আগে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মোট ৩০ হাজার জনের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হবে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”শিলিগুড়ির কর্মসূচিতে আমি থাকব। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদহের ছেলেমেয়েদের অনলাইনে দেওয়া হবে।” বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার একগুচ্ছ সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনাও (১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ছ’টি প্রকল্পের শিলান্যাস) করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আগামী দিনে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে পর্যটনের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেবে রাজ্য সরকার। তাতেও বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগ। তাঁর সরকারের আমলে ৮৯ হাজার স্কুল শিক্ষক, ১০ কলেজ শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
তিনি বলেন, ”শুধুমাত্র লেদার ইন্ডাস্ট্রি (চর্মশিল্প)-তেই আড়াই লক্ষ মানুষ কাজ পেয়েছেন। আমরা চুপচাপ কাজ করি। তাই কেউ জানতে পারেন না।”
বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লাখনি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এক লক্ষ চাকরির সুযোগ তৈরি হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে বিরোধীদের নিশানাও করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ”এ কারণেই বিজেপি, সিপিএম বাধা দিচ্ছে। কয়লাখনি হলে তো লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে! রাজনীতি করবে কী করে? আমি বলি, কর্মসংস্থান নিয়ে রাজনীতি করতে হবে না।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতায় এসেছে রাজ্যের বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কথাও। জাতীয় গ্যাস গ্রিড পাইপলাইন, তাজপুরে সমুদ্রবন্দর, বালুরঘাট-কোচবিহার-মালদহ বিমানবন্দর, এমনকি, বিভিন্ন জেলায় ২৬টি হেলিপ্যাডের নির্মাণের কথাও বলেছেন তিনি। বলেছেন, ”অন্ডাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করব আমরা।”
মূলত,বিরোধী দলনেত্রী থাকাকালীন সিঙ্গুরে টাটাগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। করেছিলেন অনশনও। যার দরুণ রাজ্য ছেড়েছিল টাটাগোষ্ঠী। এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বকালেই এবার বাংলায় বিপুল বিনিয়োগ করল টাটাগোষ্ঠী।এদিনের এই অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করেন, ”আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে কর্মসংস্থানে বাংলাকে এক নম্বরে নিয়ে যাব!এটা আমার চ্যালেঞ্জ।”
আরো পড়ুন:Anubrata Mondal:গরুপাচার মামলায় অনুব্রতকে জেরা করতে আসানসোল সংশোধনাগারে সিবিআই!