কৃষক আত্মহত্যার (Farmers Suicide) ছবি এ রাজ্যে কেমন?এই বিষয়ে রাজ্যের তরফে বার বার দাবি করা হয়েছে, গত কয়েক বছরে রাজ্যে কোনও কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি।আর সবসময় বার্তা দিয়ে এসেছেন কৃষকদের পাশে থাকার।তবে রাজ্য সরকার যতই কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিক না কেনো আদতে কিন্তু সেই বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তার মতোই অর্থাৎ ‘বেলুন ফুসের’ মতোই চুপসে গেছে।সম্প্রতি এক তথ্য প্রকাশ হয়েছে।আর তারপরই রীতিমতো আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা।আবারও চর্চার মূল কেন্দ্র হয়ে উঠলেন সেই মুখ্যমন্ত্রী।মূলত কৃষক এবং কৃষিকাজ সম্পর্কিত কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের জীবনযাত্রার মান যে খুব একটা ভাল নয় তা অনেক সমীক্ষা এর আগে প্রকাশ করেছে।দেশের একাধিক রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যেও অবস্থা খুব একটা শোচনীয় নয়। এই আবহে সম্প্রতি আরটিআই-এর প্রকাশিত এক তথ্য যা বলছে তাতে ভয় পেতেই হয়। কারণ সেই রিপোর্ট বলছে, ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শুধুমাত্র একটি জেলাতেই ১২২ জন আত্মহত্যা করেছে। তাহলে তাদের সবাই কি কৃষক?
আরটিআই প্রকাশিত এই তথ্য বলছে, যারা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে তারা সকলে যে কৃষক এমনটা নয়। এই ১২২ জনের মধ্যে এমন জনও আছেন যিনি কৃষক না হলেও কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। আর যে জেলার তথ্য এইভাবে চিন্তা বিস্তার করছে সেটি হল পশ্চিম মেদিনীপুর। এক আরটিআই কর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামীর প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের জন তথ্য আধিকারিক এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ এই সম্পর্কিত তথ্য দিয়েছেন। জেলার প্রায় ২৩ টি থানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই সংখ্যা পাওয়া গিয়েছে। যদিও রাজ্য সরকার গত কয়েক বছর ধরে দাবি করে আসছে যে রাজ্যে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা সেইভাবে আর ঘটেইনি।তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ১২২ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন এবং ২০২২ সালে এখনও পর্যন্ত কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন ৩৪ জন।তথ্যে আরও বলা হয়, ২০২১ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরে আত্মঘাতী হয়ে কৃষকমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে গোয়ালতোড়ে ১৪, কেশপুরে ৮, আনন্দপুরে ১০, কেশিয়ারি ৫, মোহনপুর ৭, দাঁতন ৭, পিংলা ৮, ঘাটাল ৬৩। সবমিলিয়ে পরিসংখ্যানটা ১২২। এদিকে ২০২২ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরে কৃষক আত্মহত্যার যে পরিসংখ্যান পুলিশ দিয়েছে তা অনুযায়ী গোয়ালতোড় ৫, কেশপুর ৫, আনন্দপুর ২, দাঁতন ৭, পিংলা ২, ঘাটাল ১৩ মোট ৩৪ জন। অপরদিকে জেলা পুলিস সূত্রে খবর, ২০২১ সালে ঘাটালে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ১০৩ জনের, দাসপুরে ৪২ জনের এবং মোহনপুরে ১১ জনের।
অবাক করা বিষয় হল এই তথ্যের সঙ্গে এন.সি.আর.বির দেওয়া তথ্যের কোনও মিলই নেই। ২০২১ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, কোনও কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনাই ঘটেনি রাজ্যে।এদিকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষক সভার জেলা সম্পাদক বলেন,-“আমাদের জেলায় কৃষক ফসলের দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঋণের বোঝায় মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছিল তাঁদের উপর। তবে, সেই পরিসংখ্যানটা এতটাও নয়।” তিনি আরও বলেন, ”আমরা চাই কৃষকরা ফসলের সঠিক দাম পাক। যে কৃষকরা আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করা হোক।”
আরো পড়ুন:Madan Mitra : হ্যাক হয়ে গেল মদন মিত্রের ফ্যান পেজ