পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরে অস্বস্তি নিয়ে তৃণমূলে (TMC) রয়েছেন বলে দাবি করেন রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার।এরপরই মঙ্গলবার জহর সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy)।

তিনি সাফ জানিয়েছেন, ‘জহর সরকারের মতো স্বার্থপর আমলা দেখিনি। সাংসদ হওয়ার আগে একদিনও মিছিলে হাঁটেননি, উনি কোনও আত্মত্যাগ করেননি। জহর সরকার একজন তৃণমূল(TMC) কর্মীরও উপকার করেননি। কোনও আত্মত্যাগ করেননি। উনি চাইলে সাংসদ পদ ছেড়ে দিন, আমরা অন্য কাউকে উপনির্বাচনে জেতাব। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ওঁর বিরুদ্ধে দলের পদক্ষেপ করা উচিত।’

ঠিক কী বলেছেন জহরবাবু। রাজ্যের প্রথম শ্রেনীর এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাত্‍কারে জহরবাবু অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘এ বছর গোড়ার দিকেও একটা গর্বের দিক ছিল যে, মোদির শক্তির সঙ্গে লড়াই করতে পারে যে, তার প্রতিনিধি আমি। পার্লামেন্টে বুকের ছাতি ফুলিয়ে ঘুরতাম। এখনও ঘুরতে পারি। তবে, একটা কমপ্লেক্স লাগে। লোকে যেভাবে দেখে, টিপ্পনি কাটে, খারাপ লাগে। মধ্যবিত্ত বাড়িতে বড় হয়েছি তো! যখন টিভিতে দেখলাম বিশ্বাসই করতে পারিনি। কারও বাড়ি থেকে এত টাকা বেরোতে পারে! কল্পনার অতীত। এমন দুর্নীতির সিন টিভিতে কম দেখা যায়। রাজনীতির কায়দা আমি বুঝি না। আমার আবেদন থাকবে, যারা ধরা পড়ছে, যারা ধরা পড়তে পারে , যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। একুশের সময় বলেছিলেন, কাটমানির কথা। অনেকে ফেরত দিয়েছে। আমাদের সেই নীতি মানতেই হবে। রাজনীতির নামে টাকা বানাবো। বান্ধবীর নামে ফ্ল্যাট কিনবো, মানা যায় না। পার্থকে আমি চিনি। কিন্তু বিশ্বাস করতেই পারছি না। দুর্নীতির টাকা দিয়ে এ ভাবে অলঙ্কৃত করা, কেমন গা শিরশির করে।’

জহর শুধু এখানেই থামেননি। তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘পার্টির মধ্যে আমাদের কথা হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন ছিল, আপনারা এসব জানতেন না? অনেকে বলেছেন, আমরা বিষয়টি জানতাম না! পার্টির মধ্যে বেশি থাকি না। বেশি ডাকেও না। বলে শুধু বক্তব্যের জন্য। সেখানেও চেপে দেওয়ার একটা চেষ্টা করে! আমি নিজে প্রতি মাসে চিন্তা করি যে, ছেড়ে দিতে পারি। কিন্তু, ছেড়ে দিলে কি উপকার হবে? টাকার জন্য তো আমি রাজনীতিতে আসিনি! আত্মসম্মান যদি না রাখতে পারি, ছেড়ে দেব।’ এরপরেই সৌগত রায়ের আক্রমণ, ‘কে সাংসদ পদ ধরে রাখতে বলেছে? প্রাক্তন আমলার পেনশন পান। প্রাক্তন সাংসদ হিসাবেও পেনশন পাবেন। জহর সরকারের মতো মানুষেরা নিজেদের ব্যক্তিগত উন্নতি আর আখের গোছানো ছাড়া আর কিছুই করে না। এরা সম্পূর্ণভাবে আত্মকেন্দ্রীক হয়। সবসময় নিজেদের নিয়েই ভাবেন। এদের কথার জবাব দিতেও ঘেন্না লাগে। ওনাকে বলে দিন মুখে বড় বড় বুলি না আউড়ে সাংসদ পদ ছেড়ে দিতে। আমরা ওই পদে অন্য কাউকে জিতিয়ে পাঠিয়ে দেব।’ তৃণমূলের তরফে অবশ্য এখনও জানানো হয়নি যে জহরবাবুর এই মন্তব্যের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে দলগত ভাবে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা।

 

আরো পড়ুন:Sougata Roy:’অনুব্রত মণ্ডল নিয়ে দল এখনও কোনও চূড়ান্ত অবস্থান নেয়নি’:সৌগত রায়!