শনিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে উদ্বোধন করা হল দেশের স্বপ্নের প্রোজেক্ট পদ্মা সেতু (Padma Bridge)।কিন্তু ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই ভয়াবহ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রক্তাক্ত হল সেই সেতু। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২ বন্ধুর।
আর এরপর থেকেই পদ্মা সেতুর (Padma Bridge) উপর দিয়ে মোটরবাইক চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের সেতু পরিবহন দফতর কর্তৃক একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবার ভোর ৬ টা থেকেই পদ্মা সেতুতে বাইক চলাচল নিষিদ্ধ করা হল।যদিও ওই পথ দুর্ঘটনার কারণেই মোটরবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে কিনা তা স্পষ্টত জানানো হয়নি।
জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলে চেপে যাওয়ার সময় মোবাইলে ভিডিও তুলছিলেন আলমগীর হোসেন (২৫) এবং মহম্মদ ফাজলু (২৪) নামে দুই যুবক।দুজনেই দোহার-নবাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা।তখনই হঠাত্ই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তারা। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যায় পদ্মা সেতুর ২৭ এবং ২৮ নম্বর পিলারের মধ্যে দুর্ঘটনা হয়। তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার রাত ১০ টা ৩০ মিনিট নাগাদ তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের দেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। উদ্বোধনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেতুতে বাইক দুর্ঘটনা বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
আলমগীর ও ফাজলুর দুর্ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এক সংবাদমাধ্যমকে পুলিশ জানিয়েছে, “মোটরসাইকেল আরোহীদের একজন চলন্ত অবস্থায় ভিডিও করছিলেন। ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি মোবাইলে থাকা ভিডিওতে একটি ট্রাককে ওভারটেক করার দৃশ্য দেখা গেছে। এরপরই ভিডিওটি বন্ধ হয়ে যায়। মনে হচ্ছে তাঁরা ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে গিয়েছিলেন।”
এদিন আলমগীর ও ফাজলুর বন্ধু জয়দেব রায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রবিবার তাঁরা ছয় বন্ধু মোটরবাইক নিয়ে সেতু দেখার উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলেন। দীর্ঘ ৬.১৫ কিলোমিটার লম্বা সেতু পার হয়ে ওপারেও গিয়েছিলেন তাঁরা। এরপর জাজিরা থেকে মাওয়ায় ফেরার পথেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি জানান, বাকি চারজনের মোটরবাইক অনেকটাই এগিয়ে গেলেও আলমগীর ও ফাজলু পিছিয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের দেরি হওয়ায় বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন বন্ধুরা। এরপরেও না আসায় বেশ কিছুটা পেছনে গিয়ে দেখেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন দুই বন্ধু। তত্ক্ষণাত্ তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যান হাসপাতালে।
প্রথম থেকেই হেঁটে পদ্মা সেতু (Padma Bridge) পারাপারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল হাসিনার সরকার। তবে মোটরবাইক চলাচলের ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। এমনকি গাড়ি পারাপারের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টোল নির্ধারিত করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ দফতর। মোটরবাইকের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা, কার বা জিপের ক্ষেত্রে ৭৫০ টাকা, পিক-আপ ভ্যানের জন্য ১২০০ টাকা, বড় বাসের ক্ষেত্রে ২৪০০ টাকা, চার এক্সেল ট্রলার পিছু ৬ হাজার টাকা এবং এর বেশি মাপের ট্রলারের ক্ষেত্রে প্রতি এক্সেলে ১৫০০ টাকা টোল ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু রবিবার দুর্ঘটনার পর থেকেই মোটরবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশ সরকার। জানা গিয়েছে, পরবর্তী কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি না করা পর্যন্ত এই নির্দেশ বলবত্ থাকবে।
আরো পড়ুন:JCC Meeting: আগামীকাল দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ভারত-বাংলাদেশের জেসিসি বৈঠক