রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ফের একবার রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে। বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় চলা উত্তপ্ত পরিবেশের মধ্যেই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar speech)। পুলিশের প্রতি তাঁর মন্তব্য—*“তৃণমূলের হয়েই যদি কাজ করতে হয়, তাহলে উর্দি খুলে সরাসরি রাজনীতিতে আসুন।”* এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পর রাজনীতিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সুকান্তবাবু স্পষ্ট অভিযোগ করেন, “পুলিশ এখন আর নিরপেক্ষ সংস্থা নয়, বরং শাসকদলের ক্যাডারের মতো আচরণ করছে।” তিনি বলেন, “যদি তৃণমূলের সেবায় নিয়োজিত থাকতেই চান, তবে সাহস করে রাজনৈতিক ময়দানে নেমে আসুন, বিজেপির সঙ্গে লড়ুন। উর্দির আড়ালে পক্ষপাতিত্ব করে জনগণের সঙ্গে প্রহসন করবেন না।”
এই বক্তব্য মহেশতলার সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনার পটভূমিতে উঠে আসে, যেখানে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ উঠে এবং পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। সেই ঘটনার প্রতিবাদেই বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। স্পিকার আলোচনার অনুমতি না দেওয়ায় শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিধানসভা চত্বরে প্রবল হট্টগোল শুরু হয়।
সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar speech) পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, “দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং ক্ষতিগ্রস্তদের দমন করা হচ্ছে। পুলিশ এখন রাজনৈতিক হাতিয়ার।” তিনি আরও বলেন, “রাজ্য সরকার এবং পুলিশ প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।”
এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির এই বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘উস্কানিমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছে। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বিজেপি হিংসা ছড়াতে চায়। পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছে।”
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সুকান্ত মজুমদারের এই বক্তব্য রাজ্যে শাসক ও বিরোধী শিবিরের সংঘাতকে আরও তীব্র করে তুলবে। পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং জনসুরক্ষা নিয়ে আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতিতে নয়া বিতর্কের জন্ম দিতে চলেছে এ মন্তব্য।