তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সংগঠন পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া জোরকদমে এগোচ্ছে। সোমবার প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বারাসত সাংগঠনিক জেলার চেয়ারপার্সনের দায়িত্বে আনা হয়েছে সাব্যসাচী দত্তকে। এর আগে এই পদে ছিলেন হাবড়ার নেত্রী রত্না বিশ্বাস। জেলা সভাপতির দায়িত্বে কোন পরিবর্তন হয়নি—সেই পদে বহাল রয়েছেন বারাসতের সাংসদ ডা. কাকলি ঘোষ দস্তিদার (Kakali Ghosh Dastidar)।
রাজ্য সংগঠনের ক্ষেত্রেও হয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ রদবদল। সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানকারী শংকর মালাকারকে রাজ্য সহ-সভাপতির পদে নিযুক্ত করা হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, মালাকারকে এই দায়িত্ব দেওয়া নিছকই আনুষ্ঠানিক নয়—বরং উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে তাঁর প্রভাবকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে দল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
একইসঙ্গে রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদে আনা হয়েছে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা কাসেম সিদ্দিকিকে। মুখ্যমন্ত্রীর ইফতার মঞ্চে তাঁর উপস্থিতি এবং মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে চর্চার বিষয় ছিল। এবার দলীয় দায়িত্বে তাঁর অভিষেক সেই জল্পনাকে একপ্রকার স্বীকৃতিই দিল।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই তৃণমূল নেতৃত্ব বীরভূম ও উত্তর কলকাতা জেলা সংগঠনের ক্ষেত্রে বড়সড় রদবদল করেছিল। বীরভূমে সংগঠন পরিচালনার ভার দেওয়া হয়েছে সাত সদস্যের কোর কমিটিকে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। একইরকম কোর কমিটি গঠিত হয়েছে উত্তর কলকাতাতেও, যেখানে রয়েছেন ৯ জন সদস্য।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, “যোগ্যতা ও পরিশ্রমই দলের মূল্যায়নের মাপকাঠি। কারও পরিশ্রম বৃথা যায় না।” তাঁর এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, নতুন নিয়োগগুলি শুধুই পদায়ন নয়—বরং দলের অভ্যন্তরে কর্মক্ষম নেতৃত্ব তৈরি ও পুনর্বিন্যাসের বড় পদক্ষেপ।
তৃণমূলের সাম্প্রতিক রদবদলের ধারা দেখলে বোঝা যায়, দল কেবলমাত্র আস্থাভাজনদেরই নয়, নবাগত এবং প্রাক্তন বিরোধীদের মধ্য থেকেও দক্ষ ও জনপ্রিয় মুখগুলিকে প্রাসঙ্গিক পদে নিয়ে এসে দলকে শক্তিশালী করতে চাইছে। ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সংগঠন ঢেলে সাজানোর কৌশল রাজ্য রাজনীতিতে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—তৃণমূল গঠনতন্ত্রের মোড় ঘুরিয়ে আরও প্রাতিষ্ঠানিক ও ফলপ্রসূ সংগঠন গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন: Ritabhari Chakraborty: বাংলা ইন্ডাস্ট্রির মাইন্ডসেট পরিবর্তনের লড়াইয়ে নাম লেখালেন ঋতাভরী চক্রবর্তী