চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রকর, লেখক—বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray) ছিলেন খাদ্যরসিক হিসেবেও অনন্য। খাবার নিয়ে তিনি নানাভাবে এক্সপেরিমেন্ট করতেন, কিন্তু তাঁর পছন্দের তালিকায় শীর্ষে ছিল বাঙালি খাবারই। Lunch বা dinner—যখনই হোক না কেন, বাঙালি রান্না না থাকলে তাঁর থালা যেন অপূর্ণ মনে হতো।

 

তবে আশ্চর্যের বিষয়, সত্যজিতের (Satyajit Ray) খুব একটা ভাত প্রীতি ছিল না। বরং রুটি, লুচি কিংবা রাধাবল্লভি পেলে খাওয়ায় মন দিতেন একেবারে। নিরামিষ হোক বা আমিষ, খাবারে স্বাদের ব্যতিক্রম থাকলেই তিনি খুশি। মাছের মধ্যে তাঁর একমাত্র প্রিয় ছিল ইলিশ। নানা রকমের ডাল, খাসির মাংস, আর ভাজাভুজি হলে তো কথাই নেই। মুরগির মাংসের তুলনায় পাঠার মাংসকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দিতেন।

 

মিষ্টির প্রতি তাঁর আলাদা দুর্বলতা ছিল। বিশেষ করে দই আর নলেন গুড়ের মিষ্টি—এ যেন তাঁর খাদ্যরসনার পরিপূর্ণতা। শীতকালে নলেন গুড়ের সন্দেশ বা পায়েস হলে রায় সাহেবের মুখে হাসি ফুটত নিশ্চিত।

 

তবে সত্যজিৎ (Satyajit Ray) শুধুমাত্র বাঙালি খাবারে আটকে ছিলেন না। চাইনিজ ও কন্টিনেন্টাল খাবারও তাঁর পছন্দের তালিকায় ছিল। কলকাতার বিখ্যাত রেস্তরাঁ ‘স্কাইরুম’-এ তিনি প্রায়শই যেতেন পরিবার নিয়ে। নতুন খাবার ট্রাই করতে ভালোবাসতেন তিনি।

 

তবে শুটিংয়ের সময় তাঁর খাওয়ার ধরনে বদল আসত। তখন ভারী খাবার নয়, বরং হালকা স্যান্ডুইচই ছিল তাঁর ভরসা। এতে শরীর চাঙা থাকত, আবার কাজেও বিঘ্ন ঘটত না।

 

সত্যজিৎ রায়ের এই রসনার জগৎ তাঁর শিল্পী সত্তারই এক প্রতিফলন—যেখানে প্রতিটি উপাদানে ছিল পরিমিতি, স্বাদ ও পরিশীলন। খাবারের ক্ষেত্রে যেমন ছিল তাঁর নিজস্ব পছন্দ, তেমনই ছিল জ্ঞানের গভীরতা ও কৌতূহল। একজন পূর্ণাঙ্গ শিল্পীর রসনার প্রতিচ্ছবি যেন প্রতিটি থালায় ফুটে উঠত।

আরো পড়ুন: Mamata Banerjee: ভবানীপুরে শীতলার চরণে মমতা, প্রার্থনায় সম্প্রীতির বার্তা

Image source-Google

By Torsha

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *