৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে জোরালো সওয়াল করল পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। তিনি স্পষ্ট জানান, নিয়ম লঙ্ঘন করলেই তা দুর্নীতি বলা চলে না। ক্ষমতার অপব্যবহারও ‘দুর্নীতি’র আইনি সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না।
পর্ষদের আইনজীবীর বক্তব্য, শুধুমাত্র অভিযোগ করলেই তাকে প্রমাণ ছাড়াই ‘দুর্নীতি’ বলা যায় না। কেউ যদি দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন, তাহলে তাঁকে নির্দিষ্টভাবে প্রমাণ করতে হবে কারা দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন, আর্থিক লেনদেন হয়েছে কিনা, বা কোনও পরীক্ষার্থী অবৈধ সুবিধা পেয়েছেন কিনা— এসবের নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে হবে আদালতে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত হয় প্রাথমিক টেট (TET) পরীক্ষা। তাতে প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন। তাঁদের মধ্যে ৪২ হাজার ৯৪৯ জনকে নিয়োগপত্র দেয় পর্ষদ। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নানা অনিয়ম ও পক্ষপাতের অভিযোগ ওঠে। কিছু চাকরিপ্রার্থী হাই কোর্টে মামলা করেন। সেই মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ ২০২৩ সালের ১৬ মে এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার নিয়োগ বাতিল করে দেন এবং তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানায়। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের বেঞ্চ ওই রায়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেন। পরে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে ওঠে, কিন্তু সেখান থেকে আবার রাজ্যের হাই কোর্টে ফেরত পাঠানো হয়। চলতি বছরের ৭ এপ্রিল বিচারপতি সৌমেন সেন এই মামলার শুনানি থেকে সরে দাঁড়ানোয় মামলাটি সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:Mamata Banerjee:শিক্ষক বিক্ষোভে কড়া মুখ্যমন্ত্রী: আন্দোলনকারীদের রাজনৈতিক মদদের অভিযোগ