উত্তরবঙ্গ সফরের প্রাক্কালে চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিকাশ ভবনের সামনে মাসের পর মাস ধরে চলা শিক্ষকদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে অবশেষে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তবে আন্দোলনকারীদের প্রতি সহানুভূতি না দেখিয়ে, বরং কড়া ভাষায় বার্তা দিলেন তিনি। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি শিক্ষকদের মিছিলে ‘বহিরাগত’দের অনুপ্রবেশের অভিযোগ তোলেন এবং বিস্ফোরক দাবি করেন যে, আন্দোলনে শিক্ষকদের তুলনায় ‘বহিরাগত’দের সংখ্যাই নাকি বেশি। শুধু তাই নয়, এই আন্দোলনকে রাজনৈতিক মদদপুষ্ট বলেও অভিযোগ করেন তিনি এবং আন্দোলনের একটি ‘লক্ষ্মণরেখা’ থাকা উচিত বলে স্পষ্ট জানান। বিকাশ ভবনে চাকরিপ্রার্থীদের ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনার পর এই প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী এমন কড়া ভাষায় মুখ খুললেন, যা ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় চাকরিহারা শিক্ষকদের সংগঠন ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’। সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় মণ্ডল মুখ্যমন্ত্রীর এই পর্যবেক্ষণকে ‘সম্পূর্ণ ভুল’ বলে অভিহিত করেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, তিনি যেন স্বয়ং এসে পরিস্থিতি দেখে যান। চিন্ময়বাবু দৃঢ়ভাবে জানান যে, সেখানে উপস্থিত প্রত্যেকেই শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। যাদের মুখ্যমন্ত্রী ‘বহিরাগত’ বলছেন, তাঁরা আসলে তাঁদেরই পরিবারের সদস্য এবং পরিজন। তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন যে, তাঁদের এই ন্যায্য আন্দোলনে কোনো রাজনৈতিক দলের বিন্দুমাত্র মদদ নেই।

মুখ্যমন্ত্রীর ‘লক্ষ্মণরেখা’ মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে চিন্ময় মণ্ডল বলেন, তাঁরা আইনের পথে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন। সামান্য গেট টপকে ভিতরে ঢোকার চেষ্টাকে মুখ্যমন্ত্রী ‘হিংসা’ এবং ‘ধ্বংস’ বলছেন। অথচ দিনের পর দিন বিনা কারণে এতগুলো শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়া এবং তরতাজা জীবন নষ্ট হওয়া কি ধ্বংস নয়, সেই প্রশ্নও তিনি তোলেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁদের প্রতি সামান্য সহানুভূতিও কি থাকা উচিত নয়, সেই বিষয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন এবং সরকার তাঁদের জন্য কী করেছে, তা এসে নিজের মুখে বলার আহ্বান জানান।

 

আরো দেখুন:Abhishek Banerjee:প্রতিনিধি বাছাইয়ে ‘দাদাগিরি’ নয়,কেন্দ্রকে স্পষ্ট বার্তা অভিষেকের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *