“ভারত গোটা বিশ্বের আশ্রয়স্থল নয়।আমাদের নিজেদেরই ১৪০ কোটি মানুষ!”শ্রীলঙ্কার তামিল উদ্বাস্তু সংক্রান্ত একটি স্পর্শকাতর মামলা খারিজ করে কার্যত ক্ষোভ উগরে দিল সুপ্রিম কোর্ট।অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ধৃত ওই ব্যক্তির প্রাণহানির আশঙ্কাকে নস্যাৎ করে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট উল্লেখ করে বুঝিয়ে দিল,-ভারত কোনও ‘ধর্মশালা’ নয় যে যেখানে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের শরণার্থী এসে আশ্রয় নিতে পারবে।দেশে যখন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মতো জটিল সমস্যা নিয়ে বিতর্ক চরমে,তখন শীর্ষ আদালতের এই কড়া পর্যবেক্ষণ নিঃসন্দেহে এক নতুন মাত্রা যোগ করল।অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া শ্রীলঙ্কার এক তামিল নাগরিক মাদ্রাজ হাইকোর্টের দেওয়া ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং সাজা শেষে দেশ ছাড়ার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি দত্তের করা মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন,-“ভারত কি পৃথিবীর সমস্ত উদ্বাস্তুদের জন্য অবারিত আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।আমাদের দেশের বিপুল জনসংখ্যা – ১৪০ কোটিরও বেশি।আমাদের দেশ কোনও ‘ধর্মশালা’ নয় যে যেখানে গোটা বিশ্বের শরণার্থীরা এসে ভিড় করবে।”বিচারপতি আরও স্পষ্ট করে বলেন,-“কেউ এখানে আসবেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করবেন,এই বিষয়টি আর চলতে দেওয়া যায় না।”

আবেদনকারীর আইনজীবী আদালতে দাবি করেছিলেন,তাঁর মক্কেল বৈধ ভিসা নিয়েই ভারতে এসেছিলেন এবং শ্রীলঙ্কায় ফেরত পাঠানো হলে তাঁর জীবন সংশয়ে পড়তে পারে।এছাড়াও,কোনও রকম আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই তাঁকে দীর্ঘ তিন বছর ধরে বন্দি রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।যেহেতু ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও সন্তান ভারতীয় নাগরিক,তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে তাঁকে ভারতে বসবাসের অনুমতি দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে কাতর আর্জি জানানো হয়েছিল।তবে,বিচারপতি দত্ত আইনজীবীর এই যুক্তিতে কর্ণপাত করেননি।তিনি কঠোর সুরে বলেন,-“সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী,শুধুমাত্র এ দেশের নাগরিকদেরই ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাসের মৌলিক অধিকার রয়েছে।যদি সত্যিই তাঁর প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে,তাহলে তিনি অন্য কোনও নিরাপদ দেশে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারেন।”

 

আরো দেখুন:India-Bangladesh trade relations:স্থলবাণিজ্যে ‘কাঁটা’!আলোচনায় বসতে চায় ইউনূস সরকার!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *