কসবায় চাকরিহারাদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দফতরে গেলেন না প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠিও ছিঁড়ে ফেললেন তিনি। বুধবার শিক্ষামন্ত্রীর সাথে বৈঠক না হওয়ার জন্য তৃণমূল সরকারকেই দোষ দিলেন তিনি।তাঁর কথায়,-“সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই এই বৈঠক বানচাল হয়ে গেল। এর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর প্রশাসন দায়ী।”
বস্তুত,মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতার একটি টেলিভিশন চ্যানেলের আলোচনাসভায় ব্রাত্য বসু ও অভিজিৎবাবুর কথা হয়। সেখানে জট কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীকে কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দিতে চান অবসপ্রাপ্ত বিচারপতি। তাতে রাজিও হন ব্রাত্য। ঠিক হয় বুধবার দুপুর ২টোয় বিকাশ ভবনে ব্রাত্য বসুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর প্রস্তাব চিঠি আকারে তুলে দেবেন অভিজিৎবাবু। সেই চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেবেন শিক্ষামন্ত্রী।ব্রাত্য বসুর সঙ্গে সাক্ষাতের আগে এদিন দুপুরে এসএসসি দফতরে গিয়ে এসএসসির চেয়ারপার্সনের সঙ্গে কথা বলেন অভিজিৎবাবু। অভিজিৎবাবু যখন এসএসসি দফতরের ভিতরে তখনই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ডিআই অফিসগুলি চাকরিহারাদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। বিক্ষোভরত শিক্ষকদের হঠাতে বিভিন্ন জায়গায় বেপরোয়া লাঠি চালায় পুলিশ। কসবাসহ বিভিন্ন জায়গায় চাকরিহারা শিক্ষিকাদের ওপরেও লাঠিচার্জ হয়। এর জেরে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভেকারীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ।
এসএসসি দফতর থেকে বেরিয়ে এই খবর পেয়ে ব্রাত্যবসুর সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা বাতিল করেন অভিজিৎবাবু। তিনি বলেন, ‘ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করব বলে আমি বাড়ি থেকে চিঠি লিখে এনেছিলাম। কিন্তু আজকে রাজ্য সরকার যে অসহিষ্ণুতা দেখিয়েছে, কসবা ও অন্যত্র শিক্ষকদের যে নৃশংসভাবে লাঠিপেটা করা হয়েছে তার পর আমরা মনে করছি, আর এই ভদ্রজনচিত আচরণ করে কোনও লাভ নেই। পুলিশ যে ভাবে লাঠি চালিয়েছে তাতে স্পষ্ট প্রশাসনের সদিচ্ছা নেই। এই ঘটনার পর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এই চিঠি জমা দেওয়া সম্পূর্ণ বাতুলতা। এই চিঠি জমা দিতে আমরা আর বিকাশভবনে যাব না। পুলিশের এই লাঠিচালনার তীব্র নিন্দা করছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমিদারের মতো আচরণ করছেন। এখনও তিনি বলেননি যে যারা দুর্নীতি করেছেন আমি তাদের খুঁজে বার করব। টাকা নিয়ে বসে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্নীতির জন্য যে যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি হারালেন তাদের পাশে আমরা শেষ পর্যন্ত থাকব।’ এর পর প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠি ছিঁড়ে ফেলেন অভিজিৎবাবু।