২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের সময়,মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে পরিচিত তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান জনসাধারণের নজর কাড়েন।তবে এবার নতুন একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে,যা শেখ সুফিয়ান এবং একটি বড় প্রতারণার কাহিনী প্রকাশ করেছে। সিবিআই-এর অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাকরির জন্য ৪ কোটি টাকা দিয়েছিলেন শেখ সুফিয়ান,কিন্তু সেই টাকা দিতে গিয়ে তিনি প্রতারিত হয়েছেন।প্রসঙ্গত,রাজ্য-রাজনীতির অন্যতম পরিচিত মুখ শেখ সুফিয়ান।আরও ভালোভাবে বললে,একুশের নির্বাচনে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন তিনি। একসময় ‘জাহাজ বাড়ি’ বানিয়ে তুমুল বিতর্কে জড়িয়েছিলেন এই দাপুটে তৃণমূল নেতা।এবার নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই-কে দেওয়া বয়ানে এই শেখ সুফিয়ানকে নিয়েই এক চাঞ্চল্যকর দাবি করে বসলেন এক সাক্ষী।সিবিআই সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরির জন্য চার কোটি টাকা দিয়েও প্রতারিত হয়েছিলেন শেখ সুফিয়ান। ওই সাক্ষী জানিয়েছেন, সেই টাকা নাকি তিনি দিয়েছিলেন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে। আদালতে দেওয়া সিবিআই-এর নথি থেকে আরও জানা যাচ্ছে, প্রাথমিক ও এসএসসির তালিকা এই শেখ সুফিয়ানই পাঠিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণকে।
সাক্ষীদের বয়ান থেকে আরও জানা যাচ্ছে, তিনি ওই টাকা দিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের এজেন্ট অরুণ হাজরাকে। এখানেই শেষ নয়, উঠে এসেছে আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সিবিআই সূত্রে খবর কাকুর বাড়িতে সেই টাকা পাঠানো হত টিভির বাক্সে। শুধু তাই নয়, গোটা বিষয়টা গোপন রাখতে টাকা লেনদেনের সময় নাকি বন্ধ থাকতো সুজয়কৃষ্ণের নিউ আলিপুরের বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরাও।
আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এপ্রসঙ্গে বলেছেন, ‘শেখ সুফিয়ানই বলতে পারবেন উনি নেতার কথায় টাকা দিয়েছিলেন নাকি নেত্রীর কথায়। উনি তো বিশ্বস্ত সেনার একজন।’ একইসাথে বিকাশবাবুর দাবি,’আমি তো এটাও জানি অনেক তৃণমূল কর্মী নিজেকে তৃণমূলের সৈনিক পরিচয় দেওয়ায় তাদের শুনতে হয়েছে, অন্যদের থেকে দশ নিচ্ছিল তুমি ছয় দাও।’বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারিও সরব হয়েছেন এই বিষয়ে। শেখ সুফিয়ানের উদ্দেশ্যে এদিন তিনি বললেন, ‘আজ যদি সুফিয়ান এই কথা বলে তাহলে কাকে দিয়েছেন আর কার নির্দেশে এই টাকা দিয়েছেন তা বলে দিলে সুবিধা হয়।’