অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চাকরিপ্রার্থীদের জীবনে একটা টানাপোড়েন ঘুরে-ফিরে আসে– কেরিয়ার না কি পরিবার? সেক্ষেত্রে কোনটা আগে বেছে নিতে হবে, তা নিয়ে বেশ কিছুটা কেও কেও দ্বিধায় পড়ে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত মোটা মাইনের চাকরির লোভ ছাড়তে পারে না অনেকেই। কিন্তু এই গতানুগতিক ধারণা থেকে বেরিয়ে এসেছে বাগুইআটির আয়ুষ শর্মা।

আয়ুষ শর্মার বাবা একটি ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে কর্মরত।আর মা গৃহবধূ। তাদের দুজনের আপ্রাণ কষ্ট এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে বড় হয়ে উঠেছেন আয়ুস শর্মা। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী আয়ুষ শর্মা বরাবরের মতোই ভালো ফলাফল করেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও। আর তাই প্রথমবারের প্রচেষ্টাতেই আমেরিকার নামকরা কোম্পানিতে বার্ষিক দেড় কোটি টাকার প্যাকেজ পেয়ে যান আয়ুষ শর্মা। প্রথমটা তিনি ভেবেছিলেন এখন যেহেতু বড় বড় কোম্পানির হয়ে বাড়িতে বসেই ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুবিধা প্রদান করা হয়,এখানেও নিশ্চয়ই তেমনটাই সম্ভব হবে।কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি জানতে পারেন,এই কোম্পানির পক্ষ থেকে কোনোরকম ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুবিধা নেই।এই খবর জানার সাথে সাথেই আয়ুস শর্মা এই চাকরিতে না বলে দেই সে।

তার কথায়, খুব বেশি দূরে চলে গেলে,কে দেখবে তার বাবা-মাকে? হঠাৎ বিপদ এলে?প্রাণপণে যাঁরা ওকে বড় করলেন, টাকার পিছনে ছুটতে গিয়ে ওঁদেরই সে একা করে দেবে?

তার কাছে চাকরিটা যেমন প্রয়োজন, তেমনই বাবা-মা, বাড়ি, সম্পর্কের বন্ধন– সবটাই জরুরি।

আর হ্যাঁ যার মেধা উর্বর, তার কি কখনও কাজের অভাব হয়? দেশ ছাড়ার সুযোগ আসবে আরও। শোনা গিয়েছে, ওই কোম্পানির অফার ছাড়াও ডয়েশ ব্যাঙ্ক এবং ওয়ার্নার ব্রাদার্স থেকে চাকরির অফার ছিল তার কাছে।

আয়ুষ ওয়ার্নার ব্রাদার্সের চাকরিটা নিয়েছে। বার্ষিক আয় ২৪ লক্ষর আশপাশে। এই কাজের জন্য তাকে যেতে হবে বেঙ্গালুরু। কলকাতা থেকে ফ্লাইটে মাত্র দু’-তিন ঘণ্টার জার্নি। চাইলেই আসা যাবে যখন-তখন।

তবে আজ আয়ুষ প্রমাণ করে দিল সব মেধাবী দেশ ছেড়ে যায় না। দেশের জন‌্যও কিছু করতে চায়।

যে প্রজন্ম দেশের হাল ধরতে চলেছে আগামীতে, সেই প্রজন্মর যত্ন নেওয়া এবং ভবিষ্যতে সে প্রজন্মকে স্থান করে দেওয়া আমাদেরই কর্তব্য। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলো এভাবেই পেরিয়ে যাক একঝাঁক উজ্জ্বল মুখ, তরতাজা প্রাণ, সম্ভাবনার রামধনু।আমরা স্যালুট জানায়,এমন আয়ুষদের!আমরা স্যালুট জানায় এমন চিন্তাধারার মানুষদের!

 

 

আরো দেখুন:Barkha Bisht Sengupta: বরখার ভাঙা সম্পর্ক কি জোড়া লাগল?