ভারতবর্ষের এই গ্রামে প্রতি ঘরে জন্ম নেয় যমজ সন্তান! হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন, ভারতের রহস্যময় যমজ সন্তানের গ্রাম হিসেবে নিজেদের জায়গা পাকা করে নিয়েছে কেরালার কোদিনহি গ্রাম।
এই গ্রামে ঢোকার মুখে আপনারা দেখতে পাবেন একটা মস্ত বড় সাইনবোর্ড। আর তাতে বড় বড় অক্ষরে লেখা “Welcome to the God’s own Twins Village” অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার আপন দেশ যমজ গ্রামে আপনাকে স্বাগত।
আপনি জানলে অবাক হবেন,- প্রতিবছর এই গ্রামে নাকি গড়ে ১৫ জোড়া যমজ সন্তানের জন্ম নেয়। স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে খেলার মাঠ, রাস্তা ঘাট সর্বত্রই, এখানে শুধু যমজ মানুষ দেখা যায়। যার কারণে, অনেক সময় অনেকে ভুলও করে বসেন অনেক বিষয়ে। এই গ্রামের অবাক করা তথ্য হলো, মাত্র দুই হাজার পরিবারের মধ্যে, নাকি ৪৫০ জনই যমজ।শোনা যায়, এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ একটি সন্তানের আশা করলেও, সৃষ্টিকর্তা তাদের একসাথে দুটি সন্তানের আশা পূরণ করে দেন।
সমুদ্রের ঠিক ধারেই রয়েছে কেরালার কোদিনহি এই গ্রাম। নোনা জল এসে মিশে যায় মাটিতে, আরেকটু ভিতরে ঢুকলে আবার দেখা যায় সবুজ ক্ষেত। একপাশে একেরপর এক বাড়ি। ভারতের আর পাঁচটা গ্রামের মতোই চেহারা কেরালার কোদিনহির গ্রামের।
সূত্রের খবর,- ২০০৮ সালে স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যমের হাত ধরে এই যমজ সন্তানের গ্রামের কথা প্রকাশ্যে আসে। শোনা যায় সেই বছর এই গ্রামে ৩০০ টি বাচ্চা জন্ম নেই। যাদের মধ্যে ৩০ জনই ছিল যমজ। বর্তমানে এই যমজ সন্তানের সংখ্যাটা ক্রমশই যেন বাড়ছে।
গ্রামবাসীরা ধারণা, এই বিষয়টি সম্পূর্ন ঈশ্বরের আশীর্বাদ। তাদের মতে, স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ রয়েছে তাদের গ্রামের ওপর। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই তথ্য মানতে নারাজ।
২০০৮ সালের এই যমজ সন্তানের গ্রামের কথা প্রকাশ্যে আসতেই,বিজ্ঞানীরা এই গ্রামকে তাদের গবেষণার একটি কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে নেই। এমনকি বাসিন্দাদের চুল এবং লালাও তারা নিয়ে গিয়েছিলেন বিদেশে রিসার্চ করার জন্য।
শোনা যায় এই গ্রাম নিয়ে শুধু যে ভারতের বিজ্ঞানীদের আগ্রহ রয়েছে তা একদমই নয়, দেশের বাইরে থেকেও বহু গবেষক এখানে এসেছেন। এবং তারা জানিয়েছেন আবহাওয়া কিংবা জিনগত কারণে এই অলৌকিক ঘটনা ঘটে। বিজ্ঞানীদের কথায়,- এমন কোনও রাসায়নিক বা জৈব পদার্থ প্রকৃতির সঙ্গে মিশে আছে, সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে।
যদিও এই বিষয়ে এখনো অব্দি কোন সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে গবেষণা চলছে জোর কদমে।
ইতিমধ্যে কেরালার কোদিনহির গ্রাম ওয়ার্ল্ড গিনেস বুকেও নাম জুড়ে ফেলেছে। তাছাড়াও ভারতের অন্যতম ঘোরার জায়গা হয়ে উঠেছে এই গ্রাম।প্রতিবছর নানা জায়গা থেকে বহু মানুষ এই যমজ গ্রামে ঘুরতে আসে। যার ফলে এখন বেশ উন্নত হয়েছে এই গ্রামের আর্থিক অবস্থা।