মেদিনীপুর (Midnapore) অরবিন্দ স্টেডিয়ামে চলছে সাব ডিভিশন ফুটবল লীগ এর প্রথম ও দ্বিতীয় ডিভিশন এর খেলা।আজ সুপার সানডে তে একদিকে যখন এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারত যখন প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা কে ধুরমুশ করে কাপ হাতে তোলা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলছে,সেই সময় মেদিনীপুরের আপামর ফুটবলপ্রেমী জনগন ভিড় জমিয়েছেন মেদিনীপুর শ্রী অরবিন্দ স্টেডিয়ামে।আজকের প্রথম ডিভিশনের গুরুত্বপূর্ণ মেদিনীপুর ডার্বি তে মাঠে নেমেছিল শহর তথা জেলার অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব স্পোর্টসম্যান রিক্রিয়েশন ক্লাব এবং তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিল শহরের আরেক জনপ্রিয় ফুটবল দল মেদিনীপুর স্পোর্টিং ক্লাব।
ম্যাচ শুরুর প্রথম থেকেই দুই দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ম্যাচ বেশ জমে ওঠে,দুই দলই একে অপরের বক্সে অনবরত আক্রমণ শানাতে থাকে।প্রথমার্ধে ম্যাচের বয়স যখন মাত্র ৬ মিনিট তখন রিক্রিয়েশন ক্লাবের ডিফেন্ডারদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির ফায়দা তুলে স্পোর্টিং এর হয়ে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন সহদেব দত্ত শর্মা।এরপর রিক্রিয়েশনও ম্যাচে সমতা ফেরাতে মরিয়া হয়ে ওঠে,একাধিক আক্রমণ বিপক্ষ বক্সে আছড়ে পড়তে থাকে এবং অবশেষে প্রথমার্ধের ১৭ মিনিটে রিক্রিয়েশন এর হয়ে একটি দুর্দান্ত গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান দলের অধিনায়ক গোপাল পোদ্দার।পরবর্তীকালে দুই দলই একাধিক আক্রমন সংগঠিত করলেও গোল করতে ব্যর্থ হয় এবং প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলের ব্যবধানে।
শুরু হয় দ্বিতীয়ার্ধ।দুই দলের কাছেই এই ম্যাচটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,কারণ সেমি ফাইনালে যাওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে যাওয়ার জন্য দুই দলকেই এই ম্যাচ জিততেই হতো।সেকারণে দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই তাদের সেরা ফুটবলারদের ব্যবহার করে জিততে মরিয়া হয়ে ওঠে,দ্বিতীয়ার্ধ বেশ জমে ওঠে।কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে কোনও দলই আর গোল সংখ্যা বাড়াতে না পারায় ম্যাচ শেষ হয় ১-১ গোলের ব্যবধানে।
ম্যাচ শেষে প্রশ্ন করা হলে স্পোর্টসম্যান রিক্রিয়েশন ক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক গৌতম দেব ও ফুটবল সম্পাদক আবির আগরওয়াল (সাহেব) মহাশয় জানান যে – “কার্ড সমস্যা ও চোটের কারণে আজ আমাদের প্রথম একাদশের বেশ কিছু ফুটবলারকে ছাড়াই মাঠে নামতে হয়েছিল।তবুও দলের ফুটবলাররা বেশ ভালো ফুটবল খেলেছে।আমাদের সম্পূর্ণ দল থাকলে আজ খেলার ফলাফল ভিন্ন হতে পারতো।তবে আশা করি পরের ম্যাচ থেকে আমরা পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে মাঠে নামবো ও আমাদের দল ভালো ফল করবে।”
তবে আজকের ম্যাচের দুই দলের কর্মকর্তারা রেফারির বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং লীগে রেফারিং অত্যন্ত নিম্নমানের হচ্ছে বলে প্রতিবাদ জানান।এই বিষয়ে জেলার রেফারি অ্যাসোসিয়েশন এর সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ পানিগ্রাহি মহাশয় কে প্রশ্ন করা হলে উনি বলেন – “বিশ্ব ফুটবলেও রেফারি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অভিযোগ থাকে।বিভিন্ন দলের মনঃপুত সিদ্ধান্ত না দিলে রেফারির বিরুদ্ধে অসন্তোষ থাকাটাই স্বাভাবিক ব্যাপার।তবে আমাদের তরুণ রেফারি সহ অন্যান্য রেফারিরা খুব ভালো রেফারিং করছেন এবং লীগের প্রতিটি ম্যাচে যাতে ভালো রেফারিং হয় সেই বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন রয়েছি।”
আজকের ফুটবল ডার্বির বিষয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সঞ্জিত তোরই মহাশয় জানান যে – “আজ এই ডার্বি ম্যাচ ড্র হলেও মেদিনীপুরবাসী একটি হাড্ডাহাড্ডি ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করলো।প্রতিদিন যেভাবে লীগের ফুটবল ম্যাচ দেখতে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন সেটা শহর তথা জেলার ফুটবল এর জন্য একটা ভালো দিক।তবে আশা করি লীগ যত গড়াবে মানুষের ভিড় ততই বাড়বে।আর যাতে ফুটবলপ্রেমীরা মাঠে ভিড় জমান সেই বিষয়ে আমরাও প্রচারের মাধ্যমে যথেষ্ট চেষ্টা করছি।”
আরও পড়ুন:Durgapuja:এবার পুজোয় ঠাকুর দেখা বাসে,ট্রাম,লঞ্চে!থাকছে লোভনীয় খাবারও