আজ প্রেসিডেন্সি বিসেবিদ্যালয়ে ভারতের ছাত্র ফেডারেশন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কমিটির আহ্বানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষক ছাত্র কনভেনশন আয়োজন করা হয়। এই কনভেনশনের প্রতিনিধিদের আলোচনায় ক্যম্পাসে পরিকাঠামোগত বিভিন্ন অসুবিধা ও আন্দোলনের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশিই মূল বিষয় হিসেবে উঠে আসে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষাঙ্গনগুলিতে কেন্দ্রের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’ বলপূর্বক প্রয়োগের বিরোধিতার খতিয়ান। এই কনভেনশনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন অধ্যাপিকা রত্নাবলী চট্টোপাধ্যায়। ওনার আলোচনার বিষয়বস্তু হিসেবে উঠে আসে “হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন ও আজকের প্রতিরোধ”।
তিনি তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে স্বাধীনতা পরবর্তী কাল থেকে বিজ্ঞানভিত্তিক ইতিহাস চর্চা এখনো যে সামগ্রিক আক্রমণের মুখে দাঁড়িয়েছে তার বিরোধিতা করেন। তিনি আরও বলেন “ইতিহাস এখন শুধু মাত্র অতীতের আলোচনা নয়, একটি দেশের ইতিহাস হলো – জাতীয় স্মৃতির ধারক, তাকে হতেই হবে সত্য এবং ব্যক্ত। এখন সামগ্রিক ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে আমাদের অতীতের স্মৃতি মুছে দেওয়ার। ইতিহাস না জানা একরকম, কিন্তু ভুল ইতিহাস জানা অন্যরকম”। তিনি ওনার বক্তব্যে সামগ্রিক ভাবে আজকের বক্তব্যের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার জনপ্রিয়তার জন্য যে ইতিহাসের সাম্প্রদায়িকীকরণ করছে, তার বিরোধিতা করেন। তিনি আরো বলেন যে , “পুরাতন ঐতিহ্যকে মুছে দেওয়ার জন্যই, সিলেবাস মুছে দেওয়া। এর বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরে বিভিন্ন স্তরে লড়াই চলছে। এই লড়াইকে বর্তমান ছাত্র সমাজই এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে ও শক্তিশালী করে তুলতে পারে”।
ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে ও ক্যাম্পাসে গণতন্ত্রের দাবিতে প্রস্তাব গ্রহণ করে এই কনভেনশন। এছাড়াও এই কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন এবং ছাত্রছাত্রীদের এই লড়াইয়ে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ড: ঈশিতা মুখার্জি, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড: অর্ণব হালদার এবং ডক্টর উত্তম কুমার বিশ্বাস। এছাড়া এই কনভেনশনে এই রাজ্যের বাইশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে আগত ছাত্রছাত্রী এবং গবেষকরা তাদের শিক্ষাক্ষেত্র মূলক রিপোর্ট পেশ করেন ।এই নয়া জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০ এবং পি পি পি এর বিরোধী অন্দোলনের রূপরেখা নির্ধারিত হয়। কনভেনশন থেকে ২২ জনের বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সাবকমিটি তৈরি হয়, যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন শুভজিৎ সরকার ও বেলাল মীর। এই কনভেনশন থেকেই গবেষক ছাত্র কো-অর্ডিনেশন টিম তৈরি হয়, যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন ঋজুরেখ দাশগুপ্ত ও সবুজ দাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে সংগঠন গড়ে তোলার প্রশ্নে কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য্য। উপস্থিত ছিলেন আকাশ কর, দীপ্তজিৎ দাস, দেবাঞ্জন দে, অনির্বাণ রায়চৌধুরী প্রমুখ নেতৃত্ব।