বছর প্রায় শেষের পথে এবং আজ চৈত্র সংক্রান্তি। সেই সাথে নীলপুজোর সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের একাধিক জেলায় শুরু হয়ে গিয়েছে শিবের গাজনও। চৈত্র মাসে এই শিবের গাজনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গ্রামবাংলার লোক সংস্কৃতি। একেক জায়গার গাজন উৎসবের একেক রকম কাহিনী ও রীতি-নীতি প্রচলিত রয়েছে।সেরকমই মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) কান্দিরের এই ৭০০ বছরের প্রাচীন গাজন উৎসবেরও রয়েছে একাধিক বিশেষত্ব। যার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল নরমুণ্ড নিয়ে নাচ।
জানা যায়, ৭০০ বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। প্রতিবছর চৈত্র মাসের সংক্রান্তিতে গাজন উৎসব পালন করে কান্দি রুদ্রদেব মন্দিরের ভক্তরা। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী নরমুণ্ড নিয়ে নাচ শুরু করে দিয়েছেন শিব ভক্তরা। বলা ভালো, কান্দি শহরের প্রাচীন উৎসব বলেই পরিচিত এই গাজন। প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি ভক্তের সমাগম হয় এই অনুষ্ঠানে। এদিন মন্দিরের দেবতা তথা রুদ্রদেব-কে একদিনের জন্য পালকিতে করে গোটা কান্দি শহর পরিক্রমণ করানো হয়। তারপর রুদ্রদেবকে নিয়ে গিয়ে রাখা হয় হোমতলায়। এই রুদ্রদেব আসলে শিব।
গাজনের জাগরন রাত্রিতে ভক্তদের একাধিক দল আসেন এখানে। যাদের মধ্যে কেউ নিজেদের আপাদমস্তক রাঙান ঘোর লাল রঙে, তো কেউ আসেন কালো রঙ মেখে। লাল-কালো এই দুই রঙ উপমহাদেশে মাতৃসাধনার সাথে বহুকাল ধরেই নিবিড়ভাবে সংযুক্ত। আবার সাদা, লাল, কালো, হলুদ ও সবুজ এই পাঁচ রঙ বজ্রযান ও সহজযানে পঞ্চ কুলের বর্ণও বটে। ভক্তরা এই রঙের পাশাপাশি নিজেদের সাজান সাদা ফুলের মালা দিয়ে, সেই সাথে পরিধান করেন নরকরোটির মালা। এখানের গাজন উৎসবের মুল আকর্ষণই থাকে মৃত কঙ্কালের মাথা নিয়ে নাচ। মন্দির প্রাঙ্গনে কঙ্কালের দেহাবশেষ নিয়ে শুরু হয় শ্মশান বোলান। আর তা দেখতে ভিড় জমান বহু সাধারণ মানুষ।
আরো পড়ুন:Shahrukh Khan: আরিয়ান হবেন পরিচালক, জানালেন শাহরুখ নিজেই