পণ্যবাহি যানবাহন থেকে পুলিশের ‘তোলা’ আদায়ের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এবার সেই ঘটনার নবতম সংযোজন বাঁকুড়ার (Bankura) জঙ্গল মহলে। তরমুজ বাহী একটি গাড়ি আটকে জোর করে তোলা আদায়ের ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভাইরাল’। বাঁকুড়া জেলা বিজেপির দাবি ‘ভাইরাল’ ভিডিও তে যে পুলিশ কর্মীদের দেখা যাচ্ছে তাঁরা রানীবাঁধ থানার পুলিশ। তরমুজবাহি গাড়ি গুলি থেকে জোর করে ৫০০ টাকা করে আদায় করছে। একই সঙ্গে বিষয়টি ট্যুইট করে আরো বেশী প্রকাশ্যে এনেছেন বিজেপির বাঁকুড়া জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল।

নেটিজেনদের হাত ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভাইরাল’ ঐ ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে আটকে রেখে জনৈক পুলিশ কর্মীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘পিক আপ হলেই আড়াইশো-তিনশো লাগবে…আপনার গাড়ি দু’টা পিক আপের থেকেও বেশী আছে…বাজি রেখে দেবো, এটা বারো টনের গাড়ি…আমাদের গাড়ির সঙ্গেই তো কারবার সারা রাত ধরে…ছ’শোর জায়গায় ৫০০ দিন না পারলে আরো পঞ্চাশ দিন…আপনারা এই সব ব্যাপার গুলা বুঝবেন নাই… তিনশো নিতে পারবো নাই। ঠিক এরপরেও ঐ ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে সঙ্গে থাকা এক সহকর্মীর উদ্দেশ্যে হাসিমুখে ‘দেখে নাও তখন আবার বলোনা’ বলেই সেই টাকা গাড়ির সামনে রাখেন। তবে আগামী দিনে এভাবে ‘মুলা-বেগুনের মতো দরদাম হবেনা’, ৫০০ টাকাই লাগবে বলে সাফ জানিয়ে দিতে শোনা যায়!

প্রসঙ্গত, শিল্প বিহীন বাঁকুড়ার জঙ্গল মহলের মানুষের আয়ের অন্যতম উৎস কৃষি কাজ। এই কৃষি কাজের উপরেই ঐ এলাকার আঞ্চলিক অর্থনীতি নির্ভর করে। ফি বছর প্রচুর পরিমানে রানীবাঁধ এলাকায় তরমুজ উৎপাদিত হয়। যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ভীন রাজ্যেও রপ্তানী হয়।

পুলিশের এই তোলাবাজির ‘ভাইরাল’ ভিডিও নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। দলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি, ঘটনাচক্রে রানীবাঁধ এলাকার বাসিন্দা সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে রানীবাঁধ থানার পুলিশ তরমুজ গাড়ি থেকে কৃষকদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে তোলা তুলছে। এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, রাজ্য জুড়েই পুলিশের এই তোলাবাজি চলছে। কোন অধিকারে পুলিশ এই কাজ করছে ? তার জবাব পুলিশ আধিকারিক থেকে পুলিশ মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকে দিতে হবে। ৫০০ টাকা করে আদায় করে পুলিশ গরীব চাষীদের চাপের মুখে ফেলছে। এই অবস্থায় ঐ তরমুজ চাষীরা ক্ষতি সম্মুখীন হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় তবে তার দায় পুলিশ প্রশাসনকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে ‘বিরোধী দল হিসেবে’ তাঁরা ঐ ঘটনার প্রতিবাদ করবেন বলেও তিনি জানান।

 

আরো পড়ুন:BJP : বিজেপিতে যোগ দিলেন পূর্ণদাস বাউলের ছেলে দিব্যেন্দু দাস বাউল