শুক্রবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Amit Shah) অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
নবান্ন-রাজভবন সংঘাতের আবহেই এই বৈঠক, সেই কারণেই এই বৈঠকের দিকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। সংসদ ভবনে এই বৈঠক হয়।
রাজভবন-নবান্নের সম্পর্কের অবনতি ঘটে ১১ ফেব্রুয়ারী বিজেপি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে রাজ্যপালের ২ ঘন্টার বৈঠকের পর থেকেই।
প্রাথমিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করলেও ওই বৈঠকের
পর থেকেই রাজ্যপাল বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন। প্রশ্ন তোলেন লোকায়ুক্ত নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়েও।
রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত বড় মাত্রা নেয় প্রধান সচিব নিয়ে। রাজ্যপালের চাপে নন্দিনী চক্রবর্তীকে প্রধান সচিবের
পদ থেকে সরিয়ে দেয় নবান্ন। এখনও পর্যন্ত রাজভবনের ওই গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি।
রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের যোগাযোগের প্রধান কাজটাই করে থাকেন প্রধান সচিব।বি জে পি অভিযোগ করেছিল প্রধান সচিবের
বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করলেন আনন্দ।
বিজেপি সূত্রে দাবি , এই বৈঠকে রাজ্যপাল বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে একটি রিপোর্ট দিয়েছেন শাহকে।
দু’জনের সাক্ষাতের খবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষে জানানো হলেও কী কী নিয়ে আলোচনা, তা অবশ্য সরকারি ভাবে জানানো হয়নি।
তবে দিল্লির রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বাংলা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শুক্রবারের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের দাবি তুলেছে রাজ্য বিজেপি।
সেই দাবি পৌঁছেছে রাজভবনেও। মনে করা হচ্ছে, শাহের (Amit Shah) সঙ্গে সে বিষয়ে কথাও হয়েছে আনন্দের।
তবে রাজভবন-নবান্ন সম্পর্কের বিষয়টিই বৈঠকে প্রাধান্য পেয়ে থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, নন্দিনীকে সরানোর দিনই দিল্লি গিয়েছিলেন আনন্দ। সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে শাহের বৈঠক হবে বলে জানা গেলেও তা হয়নি।
সে বার বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বৈঠক সারেন আনন্দ। এ বার শাহের সঙ্গে সাক্ষাত্ সারলেন।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গেও দেখা করেন আনন্দ।
রাজভবনে প্রধান সচিব হিসাবে নতুন কাকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে তা নিয়ে ধোঁয়াশা চলছে ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই। নবান্নের তরফে তিনটি নাম প্রস্তাব করা হয়।
তাঁরা হলেন অত্রি ভট্টাচার্য, বরুণকুমার রায় এবং অজিতরঞ্জন বর্ধন। যদিও কাউকেই বেছে নেননি আনন্দ। পরে জানা যায়, রাজ্যপাল খাদ্য
প্রক্রিয়াকরণ এবং উদ্যানপালন দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব পদে থাকা সুব্রত গুপ্তকে রাজভবনে চাইছেন।
তবে তা নিয়ে নবান্ন এখনও কিছু জানায়নি। ফলে খালিই পড়ে
রয়েছে রাজ্যপালের প্রধান সচিব পদ।সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে গিয়ে আনন্দের সঙ্গে দেখা করেন।
সেই পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে।