বিধায়ক,মন্ত্রী,রাজ্য পুলিশ থেকে শুরু করে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তথা ইডির হাতে উঠে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) গ্রেফতারির পর থেকে।যা দেখে চোখ কপালে উঠেছে ইডি কর্তাদের।ইডি সূত্রে খবর,কুন্তলের ফ্ল্যাট থেকে একটি ডায়েরি পাওয়া গিয়েছে।যেখানে রয়েছে বেআইনি নিয়োগে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের হিসাব।আর সেখানেই উঠে এসেছে হুগলির এক বিধায়ক এবং মন্ত্রীর নাম।সেই বিধায়ক-মন্ত্রীর হাত ধরে কুন্তল তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন।

এমনকি ওই বিধায়ক-মন্ত্রীর সঙ্গে ক্রমশ যোগাযোগ রাখতেন তাপস মন্ডল এবং মানিক ভট্টাচার্যও।এই মুহূর্তে ইডির নজরে আছেন তারা।যেকোনো মুহূর্তে তলব করা হতে পারে,বলে জানানো হয়েছে।তবে তাদের নাম প্রকাশ্যে আনেনি ইডি কর্তারা।পাশাপাশি জেরায় গোপাল দলপতি নামে এক ব্যক্তিরও নাম এনেছে কুন্তল।এদিকে জিজ্ঞাসাবাদে শুধু বড় বড় নাম নয়।তদন্তকারীরা জানিয়েছেন,-কুন্তল ঘোষ ভুয়ো সাইড তৈরি করতেন।ভুয়ো অ্যাপার্টমেন্ট লেটার ইস্যু করিয়ে তিনি চাকরি অব্দি পাইয়ে দিতেন।সব মিলিয়ে তিনি যেভাবে প্রতারণা চালিয়ে গেছেন,তা দেখে হতবাক ইডি কর্তারা।

ইডি অধিকারিকরা জানিয়েছেন,-জেরায় কুন্তল স্বীকার করেছেন,তিনি টাকা নেননি।টাকা নিয়েছেন অন্য কেউ।কুন্তল নিজে ১০ শতাংশ কমিশন পেয়েছেন মাত্র।বাকি ৯০ শতাংশ পৌঁছে যেত প্রভাবশালী মহলে।এমনকী কোন ক্ষেত্রে মোট কত করে ঘুষ নেওয়া হয়েছে তাও জানিয়েছেন কুন্তল।তার প্রতিটি সংখ্যাই চমকে দেওয়ার মতো।

পাশাপাশি ইডি কর্তারা আরো জানিয়েছেন,-কুন্তল ত্রিপুরায় একাধিক বিনিয়োগ করেছিলেন।তদন্ত চলছে,ত্রিপুরায় কেনো তিনি বিনিয়োগ করতেন?কি কি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতেন?আরো বিস্ফোরক তথ্য দিয়ে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন,-কুন্তলের সাথে রাজ্যের একাধিক পুলিশ যোগাযোগ রাখত।হোয়াটসঅ্যাপ থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।

এই সব তথ্য ইডি কর্তারা সামনে আনতেই,বোমা ফাটিয়েছেন আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।বলেন,-নিয়োগ দুর্নীতি পিরামিডের মতো হয়ে গিয়েছে।পিরামিডের একেবারে ওপরে বসে আছেন পিসি এবং ভাইপো।এই দুর্নীতি তাদের প্রভাবে হয়েছে বলেই জানান তিনি।আরো বলেন,কুন্তলের এত বড় ক্ষমতা দিদির অনুপ্রেরণা ছাড়া সম্বভ নয়।দিদি এই দুর্নীতির ভাগও হয়তো পেয়েছেন।পুরোটাই অনুপ্রেরণায় চক্রর।ডাইরিতে নাম এসেছে।হয়তো কিছু নাম উহ্য আছে।সব তাড়াতাড়ি সামনে আসবে।আইনজীবী আরো বলেন,-আমরা শুধু শিক্ষক নিয়োগ দেখছি।কিন্তু রেলের চাকরির ক্ষেত্রে কুন্তলের নাম রয়েছে।বলাগরের মানুষদের জিজ্ঞাসা করলে এই তথ্য উঠে আসছে।এই নাম গুলো আমি দিয়ে দিতে পারি।আইনজীবীর আরো সংযোজন,-যারাই গ্রেফতার হয়েছে ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করে গেছেন।কারণ আসল নামটা এখনো আসা বাকি।সব মিলিয়ে বলা যায়,পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিয়োগ দুর্নীতিতে শনির দশা লেগেছে তৃণমূল দলের।এখন এই পরিস্থিতিতে কিভাবে মুখ্যমন্ত্রী পুরো বিষয়টি সামাল দেই।সেই দিকে চোখ বিশিষ্টজনদের।

 

আরো পড়ুন:Debapriya Biswas:কলকাতায় রহস্যমৃত্যু প্রাক্তন বিমান সেবিকার