ফাইনালের আগেভাগে ময়দানের ব্যর্থ ফুটবলারের সুরেই ব্রাজিলীয় কিংবদন্তি জিকো বলেন, “মন বলছে মেসি, যুক্তি এমবাপের পক্ষে।” পেলের জেরক্স কপি! বয়স তেইশ। ইতিমধ্যে একটি বিশ্বকাপ জিতে ফেলেছেন। হয়তো পরেরটাও, হয়তো জেতেননি। না জিতলেও কম করে আরও ১২ বছর মূলস্রোতে খেলবেন। সুস্থ থাকলে, আরও তিনটি বিশ্বকাপে খেলার কথা। কেরিয়ার কোথায় শেষ করবেন এমবাপে! খেলোয়াড় জীবনে তিনটে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন পেলে। ১৯৫৮, ৬৬ ও ৭০। এমবাপে(Kylian Mbappe Lottin) কি ছাপিয়ে যাবেন?
সমকালীন ফ্রান্স দলের সবচেয়ে বড় যোদ্ধা ১৮ ছুঁই ছুঁই বয়সে বিশ্বকাপ জেতেন। সেবার গোটা টুর্নামেন্টে বিদ্যুৎ গতির বুলডোজার দৌড়ে নাস্তানাবুদ হয় বিপক্ষ। দুরন্ত খেলেন ফাইনালেও। ক্লাব পর্যায়তেও খেল দেখাচ্ছে ছেলে। এমবাপে মোনাকো ছেড়ে পিএসজি-তে যোগ দেওয়ার পর ২০১৭-১৮, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ সালের ফ্রেঞ্চ কাপ, ‘ক্যুপ দ্য ফ্রান্স’ চাম্পিয়নশিপ জেতে পিএসজি। অন্যদিকে ২০১৮-র বিশ্বকাপ থেকেই পেলের সঙ্গে তুলনা শুরু হয়। এমবাপে ১৮ বছরের কম বয়সি দ্বিতীয় খেলোয়াড় যিনি বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করেছেন। প্রথম জন স্বয়ং পেলে।
ফুটবলের প্রাথমিক পাঠে দুরন্ত ছাত্র এমবাপে(Kylian Mbappe Lottin)। নিখুত রিসিভিং, টার্নিং, পাসিং। এবং শক্তির উপাসক। যে গতিতে এমবাপে দৌড়তে পারেন, শট নিতে পারেন তাকে এককথায় ভয়ংকর বলা চলে। কোয়ার্টার ফাইনালে গোলার মতো যে দুটো শটে গোল করেছিলেন, তা মেসির পক্ষে সম্ভব ছিল না। সেমিফাইনালে মরোক্কোর বক্সে ঢুকে যেভাবে বুলডোজার হয়ে উঠেছিলেন, তা রোনাল্ডো বা নেইমারের কাজ নয়।
ভাবতে ভাল লাগছে, মেসি-টাইম, রোনাল্ডো মুহূর্ত ফুরিয়ে আসা বিশ্ব ফুটবলে এমবাপে(Kylian Mbappe Lottin) আছেন। এখনও অনেক দিন খেলবেন। দেশ ভার্সাস দেশ, ক্লাব ভার্সাস ক্লাবের ঊর্ধ্বে খাঁটি ফুটবল ভক্তের হৃদয় তাই লিও কিংবা ক্রিশ্চিয়ানোর মতোই এমবাপেকেও ভালবাসে। মাঠে নেমে আলতামিরার গুহাচিত্রের জেদি বাইসন হয়ে ওঠেন যিনি। সবুজ মাঠে ছুটতে থাকে যৌবনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার। যাঁকে দেখলে মনে হয়, প্যারিসের বস্তিতে জন্মানো পেলের মতো ছেলে!
Image source – Google