বারবার হুঁশিয়ারির পরও বেকারত্বের জীবন থেকে মুক্তি নিয়ে নিজেদের যোগ্যতায় অর্জন করা চাকরি পেতে মরিয়া টেট (TET) উত্তীর্ণ প্রার্থীরা।কিন্তু সেই প্রার্থীদের আন্দোলনে কার্যত সারা দিচ্ছেন না বলাই যায় রাজ্য সরকার,পর্ষদ,এবং তথাপি রাজ্য সরকারের পুলিশ।তারপরও তাদের আন্দোলন জারি।তবে গতকাল মধ্যরাতে একেবারেই বদলে যায় করুণাময়ীর চেহারা।

ঠিক ১৫ থেকে ১৬ মিনিটে আমরণ অনশন শুরু হয় তাদের। রাত ১২টা বেজে ১৬ মিনিট নাগাদ বিধাননগর কমিশনারেটের ডিসি ঘোষণা করলেন, এই জমায়েত আইনি নয়, বেআইনি। অভিযোগ, এর পরই সঙ্গে সঙ্গে শুরু হল অবস্থানরতদের তোলার ‘অ্যাকশন’। কার্যত টেনে হিঁচড়ে তিনটি বাসে আন্দোলনকারীদের তোলা হয় বলে অভিযোগ। ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের (নট ইনক্লুডেড) ৮৪ ঘণ্টার অবস্থান তুলতে সময় লাগল মাত্র ১৫ থেকে ১৬ মিনিট। রাত ১২টা পর্যন্তও যে জায়গা কার্যত ভিড়ে ঠাসা ছিল মুহূর্তে সব ফাঁকা করে দিল পুলিশ।এরপরই কার্যত ক্ষোভ লক্ষ্য করা যায় রাজনৈতিক ব্যক্তি থেকে শুরু করে অভিনেত্রীদের মধ্যে।

শুক্রবার সল্টলেকে অভিযান শুরুর ঠিক পরে রাত ১২টা ৪১ মিনিটে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইটারে লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। মমতার পুলিশ সল্টলেকে শিক্ষক যোগ্যতা পরীক্ষা ২০১৪-র আন্দোলনকারী প্রার্থীদের উপর নৃশংস শক্তি প্রয়োগ করছে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড অফিসের কাছে তাদের বৈধ অবস্থান বিক্ষোভ জোরপূর্বক শেষ করতে। পশ্চিমবঙ্গ না হিটলারের জার্মানি?”

এছাড়াও এই ইস্যুতেই এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছেন সুকান্ত মজুমদার।ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে তিনি বলেছেন, ‘ভয়ানক দৃশ্য। চাকরি প্রার্থীদের উপর নির্মম অত্যাচার, গোটা বাংলা দেখছে। আজ যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের লেডি হিটলার মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে লেলিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের ধর্ণামঞ্চ ভাঙলেন, ঠিক একইভাবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ঘাড় ধাক্কা দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট দুর্নীতিপরায়ণ সরকারকে চেয়ার থেকে ছুঁড়ে ফেলবে। সময় ঘনিয়ে এলেই স্বৈরাচারীদের বলপ্রয়োগ বৃদ্ধি পায়। বাংলার মানুষ সবকিছুর সাক্ষী থাকলো।’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি তিনি চাকরি ইস্যুতে আরও বলেন,’ চাকরিপ্রার্থী যারা বসে আছেন তাদের কাছে কেষ্টর একটি ভিডিও তৈরি করে নিয়ে আসুন যে কিভাবে কোটিপতি হওয়া যায় তাহলে আর তারা কেউ চাকরি চাইবে না। টিউশন পড়িয়ে মাসে কয়েক হাজার টাকা ইনকাম করা যায়?? কিন্তু এক মন্ত্রীর মেয়ে টিউশন পড়িয়ে ব্যাংকে তিন কোটি টাকা রোজগার করেছে। ভাবুন কি ট্যালেন্টেড !’

টুইট করে অপর্ণা সেন লিখলেন, ‘অনশনকারীদের গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে তৃণমূল সরকার! অহিংস আন্দোলনের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা জারি করা হল কেন? সরকারের অনৈতিক আচরণের তীব্র প্রতিবাদ করছি!’

অন্যদিকে, অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র আন্দোলনকারীদের কয়েকটা ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘পড়াশুনো করে যে, এ রাজ্য়ে চাকরি পায় না সে। বরং, পুলিশের গাড়ি চড়ে সে।’ সঙ্গে শ্রীলেখা আরও লেখেন, ‘খুব অন্যায় করেছে ওরা, অধিকারের দাবিতে অনশনে বসে, তাই না? নাকি এটাও সিপিএমের ষড়যন্ত্র?’

 

আরো পড়ুন:TET:’চাকরি হয় এই সরকার দেবে,নয়তো আমাদের সরকার এসে দেবে’:সুকান্ত মজুমদার